খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
চেম্বার ডেস্ক:: খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত আছেন তাদের পরিবারের সদস্যদেরসহ যেন টিকা দেওয়া হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সংসদে সিরাজগঞ্জ- ৬ আসনের এমপি হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সাংসদ হাসিবুর রহমানের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পরে রেওয়াজ অনুযায়ী চলমান সংসদে এই সদস্যের মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুলের ছেলেমেয়েদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কতগুলো নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা মেনেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। যার জন্য কিছু ফাইজার টিকা ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে, আরও পৌঁছাবে। মডার্নার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তাছাড়া অন্যান্য টিকাও আসছে। ইতোমধ্যে টাকাও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অলরেডি ৬ কোটি টিকার টাকা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে টিকা আসতে থাকবে। কারণ এগুলো সংরক্ষণ ও প্রদানের পরিকল্পনা আমাদের নিতে হচ্ছে। এগুলো আমরা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি কখনও করোনা একেবারেই কমে যাচ্ছে আবার নতুনভাবে নতুন শক্তিতে এই ভাইরাস আসছে। সেক্ষেত্রে আমরা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। দেখা যাচ্ছে, টিকা দেওয়ার পর অনেকের করোনা হয় তবে হয়তো তা মারাত্মক নয়। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, টিকার কোনও সমস্যা নেই। যেখান থেকে যতভাবে হোক আমরা টিকা নিয়ে আসছি। খুব তাড়াতাড়ি স্কুল কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের ও তাদের পরিবারকেও যেন টিকা দেওয়া হয়। আমরা স্বাস্থ্যকর্মীসহ তাদের বাড়ির কাজের মানুষ, গাড়ির চালক ও পরিবারের সদস্য, সবাই যেন টিকা পায় সেই ব্যবস্থাটাও নিচ্ছি। যাতে করে কোনওমতে এই সংক্রমণটা না হতে পারে।
সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনা থেকে ভাল হওয়ার পরও নানা জটিলতা রয়ে যায়। যাদের অন্যান্য রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে করোনা ঝুঁকি বাড়ায়। এজন্য সবাইকে নিজের ভাল নিজেকে বুঝে চলতে বুঝতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমরা করে যাচ্ছি। হ্যাঁ জানি, অনেকের বক্তব্য, অনেক কিছুই বলেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা যদি দেখেন, অন্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করেন; আমাদের এই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, সেই জায়গায় এটা নিয়ন্ত্রণে আমরা যেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি অনেক উন্নত দেশও কিন্তু নিতে পারেনি। এটা হলো বাস্তবতা। আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় আছে। আমরা শুরু থেকেই সব ধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখানে আমি বলব যার যার নিজেরও সজাগ থাকা, নিজেকে সুরক্ষিত রাখা এবং নিজে সাবধানে থাকা; স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সেগুলোর দিকেও সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনার প্রকোপ এখন কমেছে। কিন্তু সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
সংসদ নেতা বলেন, এখন ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ছে। এজন্য তিনি সবাইকে ঘর বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। অনেকে আপনজনের মরদেহ দাফন করেনি, ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাশ দাফন করেছে। মানুষের ঘরে অক্সিজেন সরবরাহ করা, খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ তারা করেছে।
সাংসদ হাসিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসিবুর রহমান ছিলেন কর্মীবান্ধব। মানুষের জন্য কাজ করার আন্তরিকতা তার ছিল। তার এই অকাল মৃত্যু দেশের জন্য ক্ষতি। এই সংসদে বেশ কয়েকজন সদস্যকে হারাতে হয়েছে। বারবার শোক প্রস্তাব নিতে হচ্ছে, এটা নিয়ে বলার ভাষা নেই।