টিকটকের ফাঁদে ফেলে সিলেটে তরুণীকে রাতভর ধর্ষণ,থানায় মামলা

চেম্বার ডেস্ক: দরিদ্র রিকশা চালকের সুন্দরী ষোড়শী মেয়ে। তার ‘টিকটক ও লাইকী’ ভিডিও বানানোর শখ। নিজের একটি টিকটক ও লাইকী আইডিও আছে। সেখান থেকে পরিচয় হয় আরো কয়েকজন টিকটক ও লাইকী বন্ধুর সঙ্গে।
এদের মধ্যে ‘টিকটক’ ফান্নি ও ‘লাইকী’ লিজা’র নামের দু’জনের সাথে ভালো বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায়ই মোবাইল ফোনে কলে কিংবা ম্যাসেজের মধ্যে কথাবর্তা হতো। এসময় তারা ওই তরুণীকে ‘টিকটক স্টার’ বানানো হবে বলে আশ্বাস দেয়, সেও সরলে বিশ্বাস করে। একপর্যায়ে শুটিংয়ের কথা বলে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করেন ওই দুই বন্ধু। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ‘টিকটক’ ফান্নি’র বাসায়। সেখানে ওই তরুণীকে আটকে রেখে রাতভর চলে ধর্ষণ। এতে সহযোগিতা করেছে ‘লাইকী লিজা’।

এ ঘটনায় ধর্ষিত তরুণীর বাবা বাদী হয়ে শাহপরাণ (রহ.) থানায় মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলো, গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাণীগাজী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে মো. জুবের আহমদ (২২)। বর্তমানে সে শিবগঞ্জ লামাপাড়া মোহিনী ৮৩-এ বাসার বাসিন্দা। জুবের ‘টিকটক ফান্নি’ নামে পরিচিত। অপরজন টিলাগড় এলাকার লিজা (২০)। সে ভার্চ্যুয়াল জগতে ‘লাইকী’ লিজা নামে পরিচিত। তারা দু’জনই গাঁ ডাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে বিশ্বনাথের আত্মীয়ের বাসায় ছিলো ওই তরুণী।

সেখান থেকে ফান্নি ও লিজা সিএনজি অটোরিকশাযোগে তাকে নগরীতে নিয়ে আসে। এরপর লামাপাড়াস্থ ফান্নির বাসায় তাকে রাখা হয়। সেখানে লিজা ওই তরুণীকে রেখে পোশাক পরিবর্তন করার কথা বলে চলে যায়। এরপর টিকটক ফান্নি ওই তরুণীকে নাস্তা ও কোল্ড ড্রিংকস খেতে দেয়। তরুণী ফান্নির দেয়া নাস্তা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঘটনাটি বুঝতে পেরে সে বান্ধবী লিজা ও তার বাবাকে ফোন দেয়ার চেষ্টা করলে ফান্নি তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে টিকটক ফান্নি ওই তরুণীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর রাতভর তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। পরের দিন সকালে ধর্ষক ফান্নি ঘটনা কারো কাছে প্রকাশ না করতে তরুণীকে হুমকি দেয়।

এদিকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণের পর অসুস্থ হয়ে পড়া ওই তরুণীকে নিয়ে নগরীর একটি হোটেলে নাস্তা করে টিকটক ফান্নি। পরে দুপুরের দিকে সিএনজি অটোরিকশা যোগে বিশ্বনাথে গিয়ে তরুণীকে তার আত্মীয়ের বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে আসে। বিশ্বনাথের স্বজনরা তরুণীর শারীরিক অবস্থা দেখে তার পিতা কামাল আহমদকে বিষয়টি জানান। এ সময় তরুণীও রাতভর তার উপর চলা নির্যাতনের কথা স্বজনদের জানায়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই তরুণীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শাহপরান থানার এসআই অঞ্জন সিংহ জানিয়েছেন, ওসিসিতে পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।