উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েকটি জেলা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত
চেম্বার ডেস্ক:: উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পূর্ণিমার প্রভাব। ফলে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জোয়ারের মুখে পড়েছে।
এতে জোয়ারের পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। উপকূলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-চার ফুট বেশি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে।
কুয়াকাটা: প্রবল বাতাসে সাগর ভয়ংকর রূপ ধারন করেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দমকা বাতাস ও বৃষ্টির সঙ্গে সাগরের পানি বেড়েছে ২-৩ ফুট। জলোচ্ছ্বাস আতংকে সৈকতে থাকা দোকানপাট সরিয়ে নিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কলাপাড়া: উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার সাগরঘেষা চারিপাড়া-নাওয়াপাড়া এলাকার ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে লালুয়া, পসরবুনিয়া, চারিপাড়া, নাওয়াপাড়াসহ ১১ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৮-১০ হাজার মানুষ।
ধুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল আকন জানান, বেড়িবাঁধ না থাকায় তার ইউনিয়নের গঙ্গামতি সৈকতসহ, চরগঙ্গামতি, কাউয়ার চর ও চর ধুলাসার গ্রামের শতাধিক বসতঘর ও অর্ধশত মাছের ঘের ডুবে গেছে।
রাঙ্গাবালি: চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা ও বাইলাবুনিয়া এবং বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের ৭-৮টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকেছে গলাচিপা পৌর শহরেও।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সরকার বলেন, জোয়ার ও বাতাসের তোরে সাগরের পানি ২-৩ ফুট বেড়েছে। তবে ভোলা সংলগ্ন মেঘনা, তেতুলিয়া এবং বরিশাল নগর সংলগ্ন কীর্তণখোলা নদীর পানি বাড়লেও এখন পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কিন্ত বরগুনা সংলগ্ন বিষখালী-বলেশ্বর নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতের জোয়ারে পানি আরও বাড়তে পারে।
বরগুনা: বিষখালী-বলেশ্বরের পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা জেলার ৬৬টি পয়েন্টে ২৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ। এগুলোর অধিকাংশ পাথরঘাটা ও তালতলী উপজেলায়। এছাড়া পাথরঘাটার পদ্মা-রুহিতা এলাকার ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে কিছু গ্রাম প্লাবিত হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন।
পাথরঘাটা: জোয়ারের পানি ঢুকে উপজেলার ৮ গ্রামে ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমির মুগডাল, মরিচ, মিষ্টি আলু ও সূর্যমুখী ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পায়রাবন্দর (পটুয়াখালী): ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে পটুয়াখালী উপকূলের ২১ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ভোলা: ভোলার সদর উপজেলা, মনপুরা, ডালচর, চরকুকরি-মুকরিসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় জোয়ারের পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। ২০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে, দেখা দিয়েছে খাবার পানি সংকট।
বাগেরহাট: বাগেরহাটে খাদ্যের গুদাম ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাটুর পানির নিচে। প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি উপজেলা।
মোংলা: সাগর ও পশুর চ্যালেন উত্তাল থাকায় কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
সাতক্ষিরা: সাতক্ষিরায় সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।