বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরাইল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বহালই থাকছে

চেম্বার ডেস্ক:: বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরাইল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বহালই থাকছে। রোববার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ আছে এবং ইসরাইলের প্রতি বাংলাদেশের অবস্থান বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। এই ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে কারণ সম্প্রতি বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট থেকে ইসরাইলে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত যে বক্তব্যটি ছিল সেটি বাদ দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের রেজুলেশন অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্র নীতির প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে ইসরাইল সরকারের এক কর্মকর্তা একটি টুইট বার্তায় দাবি করেন, তাদের দেশে সফরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ। এরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দেওয়া হলো।

এদিকে ইসরাইলের গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে শনিবার বলা হয়েছে, ইসরাইল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ।  মূলত পাসপোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সূত্র ধরেই এ সংবাদ করেছে গণমাধ্যমটি।  এ খবরে এক ধরণের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।  ইসরাইল ইস্যুতে কয়েক যুগ ধরে অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতি থেকে বাংলাদেশ সরে এসেছে কি না, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তবে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের কথায়।  তিনি রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশ তার ইসরাইল নীতি পরিবর্তন করেনি। তিনি আরও বলেন, নতুন পাসপোর্টে ‘ইসরাইল ব্যতীত’ (except Israel) না লেখার অর্থ এই নয় যে, বাংলাদেশ তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে।  বাংলাদেশ এখনো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি।

তবে পাসপোর্টের কেন পরিবর্তন।  এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পাসপোর্টের ‘আন্তর্জাতিক মান’ রাখতে গিয়ে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন বলেন, বিশ্বের কোনো দেশ এ শব্দটি ব্যবহার করেনি।  এমনকি আরব অঞ্চলের দেশগুলোর পাসপোর্টেও এটি লেখা নেই।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ই-পাসপোর্টে পরিবর্তন এলেও এমআরপিতে তা আগের মতোই রয়েছে।

পাসপোর্টে পরিবর্তনের বিষয়ে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আইয়ুব চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে এটা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্টে এক সময় লেখা থাকত- ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সসেপ্ট ইসরাইল, তাইওয়ান অ্যান্ড দ্য রিপাবলিক অব সাউথ আফ্রিকা’ কথাটি।

পরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও তাইওয়ানের নামটি ওই নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে বাদ গেলেও ইসরাইল থেকে যায়।  কয়েক বছর আগে হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) চালুর পরও আগের মতো প্রথম পৃষ্ঠায়ই লেখাটি ছিল।

বর্তমানে ই-পাসপোর্টে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে লেখা হচ্ছে শুধু- ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’।

গাজায় সাম্প্রতিক ইসরাইল-হামাস সংঘাতের মধ্যে এই পরিবর্তনটি আলোচনায় আসে। ৮০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ফিলিস্তিন-ইসরাইল দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ শুরু থেকেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে।

# যুগান্তর