সর্বশেষ

» বাংলাদেশ আপাতত আর টিকা পাচ্ছে না, জানিয়ে দিলো ভারত

প্রকাশিত: ২৫. এপ্রিল. ২০২১ | রবিবার

চেম্বার ডেস্ক:: ভারত থেকে চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো করোনার টিকা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত ‘কূটনৈতিক বার্তা’ পাঠানো হয়েছে। এতে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে কূটনৈতিক তৎপরতার পরও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ পাওয়ার বিষয়টি শিগগিরই সুরাহা হচ্ছে না।

এদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে ‘কোভ্যাক্সিন’ উৎপাদনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত এই ‘নোট ভারবাল’ বা কূটনৈতিক বার্তা পাঠায়। কোভ্যাক্সিন ভারতীয় বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনার টিকা। ভারতে এই টিকার ‘ফেজ থ্রি ট্রায়াল’ চলছে।

এই অবস্থায় বিকল্প উৎসের প্রতি জোর দিচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে করোনা টিকা পেতে ভারতবিহীন নতুন জোটে শরিক হয়েছে বাংলাদেশ। করোনা টিকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ, চীন, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) ভার্চুয়াল বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে শনিবার পর্যন্ত টিকা মজুত ছিল ২৭ লাখ ১৭ হাজারের কিছু বেশি। এখন প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লাখ টিকা দেওয়া হচ্ছে। এ হারে টিকা দেওয়া চলতে থাকলে খুব অল্প সময়ে টিকা ফুরিয়ে যাবে। শিগগির টিকার নতুন চালান না এলে প্রথম ডোজ পাওয়া অনেকেই টিকা পাবেন না। এছাড়া ইতিমধ্যে নিবন্ধন করেছেন, এমন অনেক মানুষকে টিকার অপেক্ষায় থাকতে হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকার ব্যাপারে বিকল্প উৎসকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি বাংলাদেশ সরকার। বিকল্প হিসেবে চীন ও রাশিয়ার উদ্ভাবিত টিকার কথা ভাবার সুযোগ ছিল। বাংলাদেশ এ দুটি বিকল্পের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখায়নি। ভারতের ওপর অতিনির্ভরশীলতার কারণে এ অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ৩ কোটি ডোজের মধ্যে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭০ লাখ টিকা দিয়েছে বাংলাদেশকে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও এরপর বাংলাদেশে আর কোনো টিকার চালান আসেনি। এ বিষয়ে গত রোববার বাংলাদেশে টিকা সরবরাহকারী বেক্সিমকো ফার্মা চিঠি দিয়ে সরকারকে বলেছে, সরকার যেন টিকার জন্য ভারত সরকারকে সর্বাত্মকভাবে অনুরোধ করে।

চুক্তির আওতায় সেরাম থেকে বাকি ২ কোটি ৩০ লাখ টিকা পেতে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ভারতে এখন করোনা সংক্রমণের যে পরিস্থিতি, তাতে আগামী এক–দেড় মাসের মধ্যে বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী কতটা টিকা পাবে তা অনিশ্চিত।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, চুক্তি অনুযায়ী বাকি টিকা পেতে ভারতের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি চীন ও রাশিয়া থেকে বাণিজ্যিক চুক্তি কিংবা যৌথ উৎপাদনের আওতায় টিকা সংগ্রহের চেষ্টাও চলছে। রাশিয়া ও চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস এ নিয়ে ওই দেশের সরকার এবং সেখানকার টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, জানা গেছে, ভারতের টিকা উৎপাদন সংক্রান্ত বার্তাকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে সরকার। কূটনৈতিক বার্তায় বাংলাদেশ সরকারকে ভারত বলেছে, আমাদের সক্ষমতা বাড়িয়ে ও বেশ কয়েকটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে যদি কোভ্যাক্সিনের যৌথ উৎপাদন শুরু হতো, তবে আমাদের দেশে ও অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ (বাংলাদেশে তৈরি) ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যেত। এতে প্রত্যেক বাংলাদেশি গর্বিত হতো। তবে সেই সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। এখনো আমাদের সেই সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করার পথ খোলা আছে।

জানা গেছে, নোট ভারবালে ভারত আরও বলেছে, তারা তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটসহ অন্যান্য খ্যাতনামা টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বাড়িয়ে চুক্তি অনুযায়ী টিকা সরবরাহের বাধ্যবাধকতা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বার্তায় ভারত জানিয়েছে, গত বছর থেকে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য নিরাপদ ও সহজলভ্য টিকা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। বাংলাদেশের জনগণের টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া এর প্রতিফলন। এর পাশাপাশি আইসিডিডিআরবি ও ভারত বায়োটেক গত বছরের ডিসেম্বর মাসে কোভ্যাক্সিনের ফেজ থ্রির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চুক্তি করেছিল। তবে সেই ট্রায়াল শুরুর অনুমোদন এখনো পাওয়া যায়নি।-রাইজিংবিডি

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30