করোনার ঝুঁকি কমাতে প্রাথমিকে শিক্ষা অধিদফতরের ২৪ নির্দেশনা
চেম্বার ডেস্ক:: কোভিড-১৯ মহামারির ঝুঁকি কমাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২৪ নির্দেশনা জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। রোববার (১৬ আগস্ট) ডিপিই এই নির্দেশনা জারি করে।
নির্দেশনায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের করণীয় সম্পর্কে ১৩টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের ওই গাইডলাইন অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীন সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয় থেকে ১৬টি নির্দেশনা জারি করে। এরপরও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন ৭০০ জন আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে ৯০ জন কর্মকর্তা, ৪৮ জন কর্মচারী, ৫৩৯ জন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছে ২৩ জন। শিক্ষকসহ মারা গেছেন ২০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের মধ্যে দুজন কর্মকর্তা, একজন কর্মচারী এবং ১৭ জন শিক্ষক।
এ অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং এর আওতাধীন সব দফতর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করতে নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
ডিপিই’র ২৪ নির্দেশনা:
১. প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহন ও অফিসে সার্বক্ষণিক মাস্ক ব্যবহার করবেন।
২. তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা।
৩. নিজের মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা।
৪. জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে অফিসের দরজা, আলমারির হাতল, লক, হ্যান্ডেল, চেয়ার, টেবিল, বৈদ্যুতিক সুইচ পরিষ্কার রাখা।
৫. বাইরে থেকে সরবরাহ করা প্যাকেটের নাস্তা/খাবার যত দূর সম্ভব পরিহার করা।
৬. নিজের ব্যবহার করা জিনিসপত্র (প্লেট, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি) নিজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
৭. অফিসে কাজ করার সময় ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।
৮. নির্দিষ্ট সময় পরপর সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে হাত পরিষ্কার করা।
৯. দাফতরিক কাজ সম্পাদনে সহকর্মীদের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা।
১০. নিজ নিজ কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সংশ্লিষ্ট ভবনে নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর প্রয়োজনীয় সহায়তা নেয়া।
১১. একান্ত প্রয়োজন না হলে অন্যের রুমে যাওয়া থেকে বিরত থাকা।
১২. কোনো রুমেই একসঙ্গে চারজনের বেশি প্রবেশ বা অবস্থান করা থেকে বিরত থাকা।
১৩. দর্শনার্থী সীমিত করা এবং তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা।
১৪. কেউ খাবার বা নামাজরত থাকলে ওই কক্ষে প্রবেশ না করা।
১৫. যত দূর সম্ভব লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি ব্যবহার করা। একান্ত প্রয়োজনে একসঙ্গে অনধিক চারজনকে নিয়ে লিফট ব্যবহার।
১৬. লিফটে মুখোমুখি না দাঁড়িয়ে, দেয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ানো।
১৭. লিফটের বাটনে চাপ দেয়ার সময় অ্যালকোহল প্যাড বা টিস্যু ব্যবহার করা। সেগুলো হাতের কাছে না থাকলে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে অথবা কনুই দিয়ে বাটনে চাপ দেয়া।
১৮. লিফট থেকে নেমে হাত পরিষ্কার করা। ব্যবহৃত অ্যালকোহল প্যাড বা টিস্যু নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা।
১৯. লিফটের ভেতর যতটা সম্ভব হাঁসি-কাশি দেয়া থেকে বিরত থাকা। একান্ত প্রয়োজন হলে রুমাল বা টিস্যুতে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেয়া। ব্যবহার করা রুমালটি জীবাণুমুক্ত করে ধুয়ে ফেলা এবং ব্যবহৃত টিস্যুটি ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলা।
২০. ই-নথি ব্যবহার করা।
২১. হার্ড ফাইল স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে ফাইল বহনকারীর নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।
২২. হার্ড ফাইল/কাগজপত্র স্পর্শ করার পর হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে ফেলা।
২৩. করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বাসায় ও অফিসে প্রতিপালন।
২৪. স্বাস্থ্যবিধি নিজে মেনে চলা এবং অন্যকে মেনে চলতে উৎসাহিত করা।