বঙ্গবন্ধু: কীর্তিমানের মৃত্যু নেই || অ্যাডভোকেট শাকী শাহ ফরিদী
অ্যাডভোকেট শাকী শাহ ফরিদী:
মতের অমিল কিংবা পথের ভিন্নতা থাকুক, এমনকি রাজনীতির হরেক কৌশলও বিদ্যমান থাকুক- তবুও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কোন হীনমন্যতা যেন এই ভূখণ্ডে আর না থাকে, নিদারুন শোকের দিনে দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে এটাই প্রার্থনা ।
বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করতে হলে কাউকে যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বা আওয়ামী ঘরানার রাজনীতি করতে হবে, এমন কোন কথা নেই- বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের উপর এই ক্ষণজন্মা অজাতশত্রু সিংহহৃদয়ের মানুষটির রক্তের ঋণ রয়েছে। ধর্ম আর রাষ্ট্রতত্ত্বের একত্রীকরণ, বুঝে অথবা না বুঝে কিংবা সহজ-সরল মানুষের মাঝে ধর্মের অপব্যাখ্যায় জাতির পিতাকে খাটো করার যে ঘৃনিত অপচেষ্টায় কতিপয় নিচুমনা মানূষ ব্যতিব্যস্ত, সময় এসেছে এহেন কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার। ধর্ম আর রাষ্ট্র নিয়ে সামান্য একটু পড়াশোনা করলেই দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে যাবে ব্যাপারটি।
বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসলে এই বাংলার মাঠিকে ভালবাসা আরো সহজতর হবে, তার দেশপ্রেম-ত্যাগ-আদর্শকে বুকে ধারণ করলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মিছিল আরো বেগবান হবে।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫, বঙ্গ-মৃত্তিকা হারায় তার সূর্য সন্তান, তার স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, তার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই থেকে বাঙালীর চক্ষু জুড়ে ভূ-খন্ডের সেরা মানুষটি হারানোর যাতনা অশ্রু; দুর্বৃত্তের বুলেটে থেমে যায় আমাদের স্বপ্নরথ।
আসলে জাতির পিতা রক্তে রঞ্জিত হননি, রক্তে রঞ্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা, ক্ষতবিক্ষত হয়েছে আমাদের সার্বভৌমত্ব, দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে আমাদের লাল সবুজের পতাকা, আহত হয়েছে আমাদের মানচিত্র, সুর হারিয়েছে আমাদের জাতীয় সংগীত, জাতি হারিয়েছে তার অভিভাবক আর দেশ হারিয়েছে তার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান।
এ ক্ষত শুকাবার নয়, এ হারানোর ক্ষতি কোনো কিছু দিয়েই পোষাবার নয়। তবুও সুন্দর-সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর হয়ে বলি- বঙ্গবন্ধু একজনই, ছিলেন-আছেন-থাকবেন,
চেতনায়-আদর্শে-ভালোলাগায়-অস্থিত্বে-অবগাহনে। আল্লাহ মহান এই নেতাকে জান্নাতবাসী করুন, আমীন।
লেখকঃ আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।