সর্বশেষ

» ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিলো: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১. ফেব্রুয়ারি. ২০২১ | রবিবার

চেম্বার ডেস্ক:: প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা বলেছেন, মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে কুচক্রীরা অনেকবার বঙ্গবন্ধুকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না।

 

আজ রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণভবন থেকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি পদক তুলে দেন।

এ সময়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিজাতীয় ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা রুখে দিয়েছিলো তৎকালীন ছাত্রসমাজ। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা।

 

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে অন্য ভাষা শেখার পাশাপাশি মাতৃভাষাকেও গুরুত্ব দিতে হবে।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্ররা। তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই উদ্যোগে তমদ্দুন মজলিশসহ কয়েকটি সংগঠন ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলে। তিনি এ আন্দোলন করতে গিয়েই কারাবরণ করেন। অথচ ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল, এটা অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না। অথচ এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

 

তিনি বলেন, একটা ভাষা মানুষের পরিচয়। এই পরিচয়টা আমাদের সম্মান এনে দেয়। এজন্য আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে। রক্ত দিয়ে লিখেছি ভাষার অক্ষর। জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘মাতৃভাষা আন্দোলনে বাঙালিরাই প্রথম রক্ত দিল। দুনিয়ার কোথাও ভাষা আন্দোলনে গুলি করে মানুষ হত্যার নজির নেই।’ সত্যিকারার্থেই ভাষার অধিকারের জন্য কেউ এত রক্ত দেয়নি। এই ভাষার জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। সেই সংগ্রামের হাত ধরেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের এই গৌরব সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছি। ভাষার অধিকার, পৃথিবীর সব হারিয়ে যাওয়া ভাষা সংরক্ষণ ও ভাষা গবেষণার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। এখানে ভাষা জাদুঘর করা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান।

 

তিনি বলেন, ভাষার সংরক্ষণ, বিকাশ ও গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদানের জন্য পদক দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। আজ থেকে এ পদক চালু হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভাষার মাসে গুণীজন ও ভাষার প্রতি সম্মান জানাতে পারলাম, এটা আমাদের সৌভাগ্য।এ সময় জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ক্ষমতায় থেকে পালন করতে পারার সুযোগ প্রদানের জন্য জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

করোনার কারণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক তুলে দিতে পারায় জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের কাছে ক্ষমা চান প্রধানমন্ত্রী।

 

নিজ নিজ মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ তিনজন ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠান এ বছর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’পেয়েছেন। জাতীয় পর্যায়ে মাতৃভাষার সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন ও বিকাশে অবদানের জন্য ২০২১ সালে জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এ পুরস্কার পেয়েছেন।

 

ভাষা সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার প্রথমবারের মতো চালু করলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক।

 

প্রতি দুই বছর অন্তর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্যাটাগরিতে এই পদক দেয়া হবে।

 

এ বছর জাতীয় পর্যায়ে অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম এবং মথুরা বিকাশ ত্রিপুরাকে এই পদক দেয়া হলো।  আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উজবেকিস্তানের ইজমাইলং গ্যালং এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে এই পদকে ভূষিত করা হলো।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930