সর্বশেষ

» বাংলাদেশ ও বাঙালির অনুপ্রেরণার উৎস বঙ্গবন্ধু : রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ১০. জানুয়ারি. ২০২১ | রবিবার

চেম্বার ডেস্ক:: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, যতদিন বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

 

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দীর্ঘ ৯ মাস ১৪ দিন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দিজীবন শেষে ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতির পিতা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এ দিনে তিনি জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

 

তিনি আরও বলেন, বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে জাতির পিতার অবদান ছিল অতুলনীয়। ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার দাবিতে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বদানসহ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় সবই হয়েছিল তার নেতৃত্বে।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন বাংলার রূপকার। ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহার কারণে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার মুক্তিকামী মানুষ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণে প্রকারান্তরে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বজ্রকণ্ঠে তার উচ্চারণ ছিল, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। ২৫ মার্চ কালোরাত্রে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী বাঙালি নিধনযজ্ঞের নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর মাধ্যমে গণহত্যা শুরু করে। এ প্রেক্ষাপটে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন এবং সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক দেন। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

 

তিনি বলেন, এরপরই পাকিস্তানি জান্তারা বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার করে এবং তদানিন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ চলতে থাকে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।

 

আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সদ্য-স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রেখেই বঙ্গবন্ধু আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে সমবেত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার জীবনের সাধ আজ পূর্ণ হয়েছে। আমার সোনার বাংলা আজ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র’। পাকিস্তানে বন্দিকালীন তার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ছিলেন তার লক্ষ্যে অটল ও অবিচল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলবো, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয় বাংলা’। দেশ ও জনগণের প্রতি এমন অকৃত্রিম ভালোবাসার উদাহরণ বিশ্বে বিরল।

 

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তার আদর্শ মুছে দিতে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করতে অপচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আজ অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। যতদিন বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে, ইনশা আল্লাহ।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর একটা যুগসন্ধিক্ষণ হচ্ছে ২০২১ সাল। এই যুগসন্ধিক্ষণে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে নিরলস প্রয়াস চালাতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনে সফলতার পথ ধরে দেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের পথে আরও সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারবে, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে এটাই প্রত্যাশা।
সূত্র : বাসস

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930