ব্যতিক্রমী আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ ঢাবি’র চীনা ভাষা শিক্ষার্থীদের

নাফিসা তাবাসসুম মিথিলা : ভয়াবহ বছরের দুঃসহ স্মৃতিতে সবার বুকে জমে আছে শোক আর শংকার পাথর। তবুও তা উপেক্ষা করে নতুন উদ্যমে নতুন বছর বরণে পিছপা হননি কেউই। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সীমিত পরিসরে হলেও নানা আয়োজনে মেতেছিল তরুণ-বৃদ্ধ-বালক। যদিও এক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষার শিক্ষার্থীদের আয়োজন।

ইংরেজি নতুন বছর হলেও চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির নানা মজাদার বিষয়ে ভরপুর ছিল তাদের বর্ষ-বরণের অনুষ্ঠান। ছোট পরিসরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের পাশাপশি ছিল ভোজন ও উপহার পর্বও। রবিবার তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল একটি বিশেষ দিন।
রাজধানীর ‘হ্যাপি আওয়ার’ রেস্তোরাঁয় ইন্সটিটিউটের স্বেচ্ছাসেবি শিক্ষক আকিব ইরফানের আয়োজনে হয় এই ব্যতিক্রমী বর্ষ-বরণ অনুষ্ঠান। করোনাকালীন অনলাইন ক্লাসের পর শিক্ষার্থীদের সাথে এই শিক্ষক বা ‘লাওশি’র এটাই ছিল প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। প্রসঙ্গত, চীনা ভাষায় শিক্ষককে ‘লাওশি’ বলা হয়।
অনুষ্ঠানে পরিচয় পর্বে শিক্ষার্থীরা সবাই নিজেদের উপস্থাপন করেন শিক্ষকের দেয়া চীনা নামে।
পরে শিক্ষক আকিব ইরফানের সভাপতিত্বে জীবন ও পেশা নিয়ে এক আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি’ বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা নানারকম প্রশ্ন, অভিজ্ঞতা, প্রত্যাশা তুলে ধরেন। ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী অদ্রিকা ও আদিবের মতে, লাওশির আলোচনায় ভবিষ্যত কর্মক্ষেত্রের নানাদিক ও সমূহ সম্ভাবনার কথাগুলো শিক্ষার্থীদের উপকৃত করেছে। এসময় চীনা ভাষা শেখার নানা ধাপ ও দিক নিয়েও আলোচনা হয়।
আয়োজনে আকিব ইরফান লাওশি শিক্ষার্থীদেরকে চীনা সংস্কৃতির মজাদার দুটো জিনিসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। প্রথমটি হলো চপস্টিক, যেটাকে চীনা ভাষায় বলে ‘খুয়াই জি’। চীনাদের খাদ্যাভাসের অন্যতম অংশ এটি। লাওশি শিক্ষার্থীদের ‘খুয়াই জি’র ব্যবহার শেখানোর সময় এনিয়ে বেশ মজাদার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
রেস্তোরাঁর স্বাগতমকারী পানীয় বা ওয়েলকাম ড্রিংকস উপভোগ করতেই লাওশির পরিচালনায় চীনা ভাষায় ‘সংখ্যা হারানো’ খেলায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা। সেই খেলায় জয়ী হন মোঃ সুমন মিয়া। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে ‘Kisob.com’ এর সৌজন্যে দেয়া হয় এক সেট ‘খুয়াই জি’ আর ‘হোং পাও’। চীনা নববর্ষের সময় সাধারণত যেই বকশিশ বা উপহার লাল খামে দেয়া হয় সেটিই মূলত ‘হোং পাও’ হিসেবে পরিচিত।
অনুষ্ঠানের শেষে শিক্ষার্থী মানিকের গিটারের ঝংকারে এক আনন্দঘন সঙ্গীতানুষ্ঠান সকলকে আরো উজ্জীবিত করে। স্থিরচিত্র ধারণ আর শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে সমাপ্তি হয় অনুষ্ঠানের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের সবার পক্ষ থেকে আকিব ইরফান লাওশির জন্য শুভ কামনা জ্ঞাপন করেন ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এবং ভবিষ্যতে এরকম আয়োজনের মাধ্যমে চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারে নিজেরাও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।