সর্বশেষ

» আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে: দাবি বাবুনগরীর

প্রকাশিত: ২৩. ডিসেম্বর. ২০২০ | বুধবার

চেম্বার ডেস্ক:: হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, তার ওপর কোনও নির্যাতন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।

 

বুধবার দুপুরে, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন বাবুনগরী।

 

হেফাজতের বাবুনগরী আমির বলেন, আল্লামা শফীর মৃত্যুর তিন মাস পর একটি কুচক্রী মহল তার মৃত্যুকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে একটি মিথ্যা মামলা করেছে। মামলাটি ‘রাজনৈতিক চক্রান্তের’ এবং দেশের স্থিতিশীল অবস্থা বিনষ্ট করার দুরভিসন্ধি। তার মৃত্যু নিয়ে একটি কুচক্রী মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ছাড়া হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র ও হেফাজতের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আজকের এই সংবাদ সম্মেলন থেকে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি– অনতিবিলম্বে দায়ের করা এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামদের সঙ্গে পরামর্শ সাপেক্ষে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।

 

আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার, হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হেফাজত নেতাদের জড়িয়ে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আফছার আজাহারী।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, মাদ্রাসার তৎকালীন শিক্ষা পরিচালক আল্লামা মুফতি নুর আহমদকে পাশ কাটিয়ে সহকারি শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানী দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলো। সে একক সিদ্ধান্তে ছাত্রদের ভর্তি ফরম এবং দাওরায়ে হাদিস ছাত্রদের বোর্ড পরীক্ষার ফরম আটকে রাখে। অনেক ছাত্রদের বোর্ডিংয়ের খাবার এবং সিট বাতিল করে। তাদের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারি কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লামা আহমদ শফি’র ইন্তেকালের দুদিন পূর্বে ১৬ সেপ্টেম্বর ছাত্ররা বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা তাদের সুনির্দিষ্ট দাবি তৎকালীন মুঈনে মুহতামিম আল্লামা শেখ আহমদের মাধ্যমে আল্লামা শাহ আহমদ শফির কাছে পেশ করেন। তিনি শূরা আহ্বান করে মাওলানা আনাস মাদানীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন এবং ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন। বাকি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ১৯ সেপ্টেম্বর পুনরায় শূরা অধিবেশন আহ্বান করেন। এ ঘোষণার পর মাদ্রাসায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসে।

 

কিন্তু পরের দিন ১৭ সেপ্টেম্বর শূরা সদস্যদের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে মাওলানা আনাস মাদানী অনির্দিষ্টকালের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার পাঁয়তারা করলে, পুনরায় ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তখন শাহ আহমদ শফি মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীর দীর্ঘদিনের অনিয়ম, ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি জুলুম নির্যাতনসহ নানা দুর্নীতি তাঁর সামনে স্পষ্ট হলে তিনি আনাস মাদানীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে স্বেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করে শূরার সদস্যের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, একটি চিহ্নিত দালাল গোষ্ঠি আহমদ শফিকে জিম্মি করে হাটহাজারী মাদরাসায় ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম করে রেখেছিল। সেখানে নানা অনিয়ম এবং ছাত্রদের ওপর অব্যাহত হয়রানি ও নির্যাতন চালিয়ে তাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। এছাড়া বেশ কিছু স্বনামধন্য শিক্ষককে মাদ্রারাসা থেকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করে দেওয়া হয়, যা ছিল অত্যন্ত অবমাননাকর। তাদের অনিয়ম ও হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নামে।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031