তুরস্ককে বাদ দিয়ে ভূমধ্যসাগরে কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না: এরদোগান
চেম্বার ডেস্ক:: তুরস্ককে বাদ দিয়ে পূর্ব ভূ-মধ্যসাগরে কোনো পরিকল্পনা কিংবা মানচিত্র বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ার উচ্চারণ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে তুরস্কের অধিকার বঞ্চিত করার কোনো পরিকল্পনা গ্রহণযোগ্য হবে না। খবর ডেইলি সাবাহর।
সমুদ্র তলদেশের সম্পদ নিয়ে গ্রিসের ফাঁদে পা দেবে না আঙ্কারা।
ভূমধ্যসাগরের আশপাশের দেশগুলোকে বিশেষ করে গ্রিসকে আমি বলতে চাই, এই ইস্যুতে কোনো ‘জিরো সাম গেম’ (এক পক্ষ সব পাবে অন্য পক্ষ বঞ্চিত হবে) হতে দেয়া হবে না। আমি এখানে উইন উইন ফর্মুলা (দুপক্ষই লাভবান) চাই।
এদিকে ভূমধ্যসাগর বিতর্কে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
আগস্ট থেকে গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে বিতর্ক চলছে। ভূমধ্যসাগরের একটি অংশে খনিজ তেলের সন্ধান মিলেছে। কীভাবে সেই তেল উত্তোলন করা সম্ভব তা দেখার জন্য সেখানে জাহাজ পাঠিয়েছে তুরস্ক। কিন্তু গ্রিসের দাবি ওই এলাকা তাদের। ফলে দ্রুত তুরস্ককে জাহাজ সরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে তারা।
গত চার মাসে তুরস্ক একবারই কেবল ভূমধ্যসাগরের ওই এলাকা থেকে জাহাজ সরিয়েছিল। কিন্তু তার পর আবার তারা সেখানে জাহাজ পাঠায়। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান জানিয়ে দেন, তেল উত্তোলনের পরীক্ষা জারি থাকবে। কারও নিষেধ তুরস্ক মানবে না, কারণ ওই এলাকা গ্রিসের নয়।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরেই এই বিতর্কে অংশ নিয়েছে। গ্রিসের পাশাপাশি তারাও তুরস্ককে জাহাজ সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তুরস্ক তাতে কান দেয়নি। ইইউ চেষ্টা করেছিল গ্রিস, তুরস্ক ও সাইপ্রাসকে একসঙ্গে বসিয়ে বৈঠক করার। কিন্তু তাও সফল হয়নি। এ পরিস্থিতিতেই সোমবার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়, সেখানে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, তুরস্ক যে আচরণ করছে, তাতে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা না চাপিয়ে আর কোনো উপায় নেই। আগামী ১০ তারিখ ফের বৈঠকে বসবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সেখানেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। ফ্রান্সও চাইছে ইইউ তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করুক। সম্প্রতি ফ্রান্সে শিক্ষক হত্যা কেন্দ্র করে তুরস্ক এবং ফ্রান্সের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে। তখন থেকেই ফ্রান্স চাইছে, তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হোক।
নিষেধাজ্ঞা চাপলে তুরস্কের সঙ্গে অস্ত্রের ব্যবসা বন্ধ হতে পারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের। তেল ও খনিজের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে।
এরদোগান অবশ্য সোমবারেই বলেছেন, গ্রিসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে তিনি রাজি। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বিষয়টিকে অন্ধের মতো দেখছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তার বক্তব্য, বিতর্কটি নিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যে আচরণ করছে, তা আশাব্যঞ্জক নয়।