কানাইঘাটে সরকারি অনুদান পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রতারণা
কানাইঘাট প্রতিনিধি:: করোকালীন মে মাসে লকডাউনের সময় কানাইঘাটের সবজিগ্রাম কৃষি সমবায় সমিতি লিঃ কায়স্থগ্রামের সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান ও তার সমিতির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক আর্থিক অনুদানের ৭ হাজার টাকা দেওয়ার নাম করে গ্রামের অনেকের কাছ থেকে প্রতারণা করে ১ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি অনুদানের টাকা না পেয়ে অনেক ভুক্তভোগী তাদের ১ হাজার টাকা সবজিগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান সহ সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছে ফেরত চাইলে উল্টো তাদেরকে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, টাকা ফেরত চাওয়ার ঘটনায় সবজিগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান ও তার পরিবারের লোকজন মো. জিলহজ্ব নামে এক যুবককে মঙ্গলবার গভীর রাতে সবজিগ্রামের কায়স্থগ্রাম অফিসে ডেকে এনে বেদড়ক মারপিট করেছেন।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে বুধবার সবজিগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান সহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কায়স্থগ্রামের মৃত আব্দুল মুছব্বিরের ছেলে মো. জিলহজ্ব।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত মে মাসে করোনাকালীন লকডাউনের সময় সবজিগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান, দায়িত্বশীল তজম্মুল দরবারী, ফয়ছল আহমদ, বাবুল আহমদ, হান্নান আহমদ সহ সমিতির সদস্যরা করোনার কারণে সরকারের পক্ষ থেকে সমিতির মাধ্যমে গ্রামের গরীব ও শ্রমজীবি কৃষকদের ৭ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হবে। অনুদানের টাকা পেতে হলে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে এবং বিকাশ একাউন্ট করে ৩ দিনের মধ্যে অনুদানের টাকা বুঝে পাবেন বলে সবজিগ্রাম সমিতির রশিদ মাধ্যমে ১ হাজার টাকা করে প্রায় শতাধিক লোকজনদের কাছ থেকে তারা টাকা নেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারি অনুদানের টাকা না পেয়ে ভুক্তভোগী অনেকে তাদের কাছ থেকে নেওয়া ১ হাজার টাকা ফেরত চান। এ অবস্থায় সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন সদস্য অনুদানের টাকা দেয়া হবে বলে কালক্ষেপণ করে যাচ্ছেন এবং ভুক্তভোগীদের নানাভাবে ভয়ভীতিও প্রদর্শন করছেন।
এছাড়া যারা সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছে ১ হাজার টাকা করে দিয়েছেন তারা সম্প্রতি কায়স্থগ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে বিচার চাইলে এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান সহ তার সঙ্গীরা। গ্রামের মুরব্বীদের কাছে বিচার দেওয়ার কারণে গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে সমিতির অফিসে মো. জিলহজ্বকে ডেকে নিয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান ও তার ভাই-ভাতিজারা কেন জিলহজ্ব অন্যান্য ভুক্তভোগীদের নিয়ে গ্রামে বিচারপ্রার্থী হলো বলে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেদড়ক মারপিট করে শাসিয়ে দিয়ে এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে দেখে নেয়ারও হুমকি দেয়।
সমূহ অভিযোগ এনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে জিলহজ্ব বাদী হয়ে যাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে কতেক সাক্ষীর নাম উল্লেখ করে নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের বাদীসহ যাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে আব্দুস সাত্তার, শামীম আহমদ, নাজিম উদ্দিন, ফয়জুল হক, রশিদ আহমদ, বাদশা মিয়া অনেকে জানিয়েছেন, সবজিগ্রাম সমিতির নেতৃবৃন্দ অত্যান্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তারা এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। এমনকি কৃষিকার্ড দেয়ার নামে সমিতির লোকজন এলাকার অনেকের কাছ থেকে ৩’শ টাকা করেও নিয়েছেন।
অপরদিকে এলাকার অনেকে জানিয়েছেন কায়স্থগ্রাম সবজিগ্রাম সমিতির নেতৃবৃন্দ নানাভাবে সমিতির নাম ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন অনুদানের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার না করে তছরুফ করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমানের সাথে কথা হলে, তিনি সরকারী অনুদানের কথা বলে ১ হাজার টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন ১ হাজার টাকা করে তিনি সমিতির সদস্য ফি নিয়েছেন। এছাড়া জিলহজ্বকে ডেকে অফিসে এনে মারপিটের ঘটনা মিথ্যা বলে দাবী করেন।