যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর : আপিল বিভাগ
চেম্বার ডেস্ক:: আপিল বিভাগ বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর কারাদণ্ড। তবে আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কোনো আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিলে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে থাকতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচাপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
ভার্চুয়াল আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্ত ছিলেনন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামি পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।
আপিল বিভাগের রায়ের বরাত দিয়ে আইনজীবী আসাদ উদ্দিন বলেছেন, যদি কোনো আদালত রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু উল্লেখ করে দেন তা হলে আসামিরা সেই সুবিধা পাবেন না। তবে যে সকল রায়ে যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু উল্লেখ করেননি তাদের জেলকোট অনুযায়ী বিভিন্ন রেয়াদ পূর্ণ হলে তাকে ৩০ বছর পর সাজা খাটা ব্যক্তি মুক্তি পাবে।
গত ১১ এপ্রিল এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ শুনানিতে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ হবে কি না সে বিষয়ে আইনি মতামত তুলে ধরতে ৪ সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন আদালত।
২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি আতাউর মৃধা ওরফেআতাউর ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এর পর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল আবেদন জানান।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ সাত দফা অভিমত দেন। এর পর আপিলের ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
যাবজ্জীবন সাজার মেয়াদ নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা বিভ্রান্তিতে ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ আমৃত্যু কারাদণ্ড, নাকি ৩০ বছর কারাদণ্ড হবে, নাকি অন্য কোনো সিদ্ধান্ত আসবে, তা জানা গেল এ রায়ের মধ্য দিয়ে। এ রায়ের মধ্য দিয়ে বিভ্রান্তির অবসান ঘটল মনে করেন আইনজীবীরা।