জো বাইডেনের জয়ে মুখে কুলুপ চীনের

ট্রাম্প জমানার অভিজ্ঞতা বিশেষ ভাল নয়। গত চার বছরে নানা ক্ষেত্রে চীন-আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন দুই শক্তিধর দেশের সম্পর্ক এতটাই তলানিতে ঠেকেছিল যে তা এই দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। ফলে মনে মনে ট্রাম্পকে যে আর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চাইছিল না জিনপিংয়ের দেশ, তা একপ্রকার স্পষ্ট। কিন্তু ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয়ের পরও মুখে কুলুপ চিনের। এখনও পর্যন্ত আমেরিকার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তরফে আনুষ্ঠানিক কোনও বার্তাই মিলল না নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে নিয়ে। এই নীরবতা জল্পনা বাড়াচ্ছে।

 

করোনা ভাইরাস ‘চীনা ভাইরাস’ বলে খোঁচা থেকে আমেরিকায় চীনা অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত ছুটে যাওয়া, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে চীন বিরোধিতার এ একেবারে সাম্প্রতিকতম নজির। এমনকী এই উপমহাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কাশ্মীর কিংবা ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক নিয়েও বারবার চিনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে আমেরিকা। তাছাড়া দু’দেশের মতানৈক্যের অন্যতম বিষয় ছিল ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি। এ বিষয়ে বিশ্বের দুই শক্তিশালী দেশ কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলতে নারাজ। ফলে গত চার বছর ধরে একাধিক কারণে চীন-আমেরিকার সম্পর্কের ক্রমশ অবনতিই হয়েছে।

 

এখানেই বড় চ্যালেঞ্জের মুখে নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তলানিতে ঠেকে যাওয়া সম্পর্ককে পুনরুদ্ধার করতে হবে তাঁকে। চীন-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। চীনের প্রশাসনিক মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, ট্রাম্প আমলের পরিস্থিতির ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে বাইডেনকে একটা পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। উচ্চ পর্যায়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সমঝোতাকে একটা জায়গায় এনে তবেই পরিস্থিতির উন্নতির দিকে নজর দিতে হবে। চীনের আশা, ট্রাম্পের দেখানো পথের উলটোপথে হেঁটেই বাইডেন নিজের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করবেন।

 

তবে এত বিশ্লেষণ সত্ত্বেও কেন বাইডেনের জয়ের পর কেন কোনও প্রতিক্রিয়া নেই জিনপিং প্রশাসনের? তাহলে কি জল মাপছেন জিনপিং? বোঝার চেষ্টা করছেন আসলে বাইডেনের নেতৃত্বাধীন আমেরিকার সঙ্গে তাঁদের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক কেমন হতে চলেছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরা।