ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে হত্যার ইচ্ছায় অনড় সাংসদ লিয়াকত

চেম্বার ডেস্ক:: নবী মুহাম্মদ (স.) এর ‘ব্যাঙ্গাত্মক’ কার্টুনকাণ্ডে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁকে হত্যার ইচ্ছা প্রকাশ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন, তা এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সাংসদ লিয়াকত জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিবও।

 

আজ বুধবারও তিনি দুই দিন আগে দেওয়া তাঁর বক্তব্যে অনড় থাকার কথা জানিয়েছেন।

 

২ নভেম্বর সাংসদ লিয়াকতের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার আমিনপুর মাঠে হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্যে সাংসদ বলেন, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে কাছে পেলে তাঁকে আমি হত্যা করে ফাঁসির মঞ্চে যেতে চাই।’

 

ফ্রান্সের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে সাংসদ বলেন, ‘আপনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমার অনুরোধ, ফ্রান্সের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্জন করুন। …৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদের যে অধিবেশন বসবে, ওই অধিবেশনে ফ্রান্সের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্জনের জন্য প্রস্তাব আনুন। প্রস্তাব আনলে দেশের সব মুসলমান আপনার পক্ষে থাকবে।’

 

সাংসদের বক্তব্যের সময় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা নানা স্লোগান দেন। মঞ্চে এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।

 

সাংসদ লিয়াকতের এ বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘এটা তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য। এর সঙ্গে দল সম্পৃক্ত নয়, এ ধরনের বক্তব্য দলের কাছে গ্রহণযোগ্যও নয়। তবু তিনি যেহেতু দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন, তাই বিষয়টি নিয়ে কী করা উচিত, তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

 

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবেও প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘একজন আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে কাউকে হত্যার ঘোষণা দিতে পারেন না। এটি নিন্দনীয়। মুসলমান হিসেবে আমরা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের ভূমিকার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে পারি।’

 

আর সাংসদ লিয়াকত হোসেন নিজের বক্তব্যে অনড় রয়েছেন জানিয়ে আজ বিকেলে বলেন, ‘বক্তব্যটি সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত। আমার এ বক্তব্যে যেকোনো শাস্তি হলে আমি মাথা পেতে নেব।’