বৃহত্তর জৈন্তিয়ায় প্রতিটি ঘরে সরকারিভাবে গ্যাস সংযোগের দাবী

চেম্বার ডেস্ক:: জৈন্তিয়ার গ্যাস দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সুবিধা নিচ্ছেন নানা উপজেলার জনসাধারণ। সিলেটের গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের সময় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয় এ সকল উপজেলায়। কিন্তু জৈন্তিয়ার বিভিন্ন গ্যাস কুপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করে অন্যত্র দেয়া হলেও, গ্যাস সুবিধা থেকে বঞ্চিত জৈন্তিয়া। এ ব্যাপারে দীর্ঘ ৬৫ বছর থেকে গ্যাস সংযোগের দাবি জানিয়ে আসছেন জনগণ। তাই দীর্ঘ দিন থেকে বঞ্চিত জৈন্তিয়ায় প্রতিটি ঘরে সরকারিভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি জানিয়েছেন “জৈন্তিয়ায় গ্যাস চাই সমন্বয় পরিষদ।

 

রোববার (১৮ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা-জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সমূহ নিয়ে গঠিত বৃহত্তর জৈন্তিয়া ঐতিহাসিকভাবে যা ১৭ পরগনা হিসেবেও পরিচিত। প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি এই বৃহত্তর জৈন্তিয়ার হরিপুরে ১৯৫৫ সালে প্রথম গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয় এবং ১৯৫৭ সাল থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। বর্তমানে ৭টি কূপ থেকে নিয়মিত গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ হচ্ছে। ৯নং কূপে গ্যাস উত্তোলন প্রক্রিয়াধীন। ৮নং কূপে গ্যাস উত্তোলন শীঘ্রই শুরু হবে। উক্ত গ্যাস দেশের জ্বালানী খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ৬৫ বছরে বৃহত্তর জৈন্তিয়ায় তথা সিলেট-৪ ও সিলেট-৫ নির্বাচনী এলাকার গ্যাস সংযোগ ও সরবরাহ থেকে বিরত।

 

 

 

 

বৃহত্তর জৈন্তিয়ার একমাত্র ছাত্র সংগঠন “জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ” ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে গ্যাস সংযোগের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। সিলেট ৪ আসনের ৬ বারের নির্বাচিত সাংসদ ইমরান আহমদ বর্তমান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ২০১৮ সালের  ২৬শে জুন জাতীয় সংসদে বৃহত্তর জৈন্তিয়ায় গ্যাস সংযোগের দাবীতে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত গ্যাস সংযোগ প্রদানের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

 

কিন্তু বৃহত্তর সিলেটের ছাতকে, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জে ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার ও উত্তোলনের সাথে সাথে তাদের এলাকাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে গ্যাস সংযোগ ও সরবরাহের আওতায় আনা হয়। অথচ জৈন্তিয়া এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

জৈন্তিয়ায় গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হলে অত্র এলাকায় শিল্পায়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইপিজেড, ক্ষুদ্র, ও মাঝারি এবং বৃহৎ শিল্প কারখানা গড়ে উঠার বাস্তব সম্ভবনা রয়েছে। শুধু গ্যাস সংযোগেই নয় সিলেট-লোভাছড়া, সিলেট-জাফলং, সিলেট-ভোলাগঞ্জ, রেল সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে খনিজ সম্পদ যেমন-পাথর, বালু, নিরাপদে পরিবহনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো সমৃদ্ধ হত। দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন উদ্দ্যোগ পরীলক্ষিত হচ্ছে না। এছাড়াও পিয়াইন, সুরমা, সারী নদী খনন করে ও বেড়ী বাঁধ নির্মাণ করে অত্র এলাকার জনপদকে পাহাড়ী ঢল ও বন্যার কবল থেকে রক্ষা করার উদ্যোগ গ্রহণেরও জোর দাবী জানান তাঁরা।

 

সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, চলমান মুজিববর্ষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার মাধ্যমেই এই অবহেলিত জনপদের গ্যাস প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং অন্যান্য সমস্যাগুলো আরো সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জৈন্তিয়া গ্যাস চাই সমন্বয় পরিষদের সভাপতি এটি এম বদরুল ইসলাম, সমন্বয়ক ভিপি খসরুজ্জামান খসরু, সদস্য আইনজীবী জামাল আহমদ, সাইফুল, আইনজীবী আলতাফ হোসেন, মাহফুজুল কিবরিয়া মাহফুজ, ফারুক আহমেদ, সাসুজ্জামান, লুৎফুর রহমান সহ প্রমূখ।