এইচএসসির ফল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে আইনি নোটিশ
চেম্বার ডেস্ক:: জেএসসি ও এসএসসির ফলের ওপর ভিত্তি করে উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) ফল নির্ধারণে সরকারি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আগামী তিন দিনের মধ্যে নোটিশে উল্লিখিত দাবি মেনে না নিলে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সাভারের মোফাজ্জল-মোমেনা চাকলাদার মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী এবং ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরীক্ষার্থী শতাব্দী রায়ের পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণ না করে জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে করে নোটিশ প্রদানকারীসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করার প্রস্তুতি থাকার পরেও আগের জিপিএর কারণে ভালো ফল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের গড় করার কারণে একদিকে যেমন অনিয়মিত, একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য, প্রস্তুতিহীন শিক্ষার্থীর জন্য সুযোগ তৈরি হবে, তেমনিভাবে কোনো কারণে জেএসসি কিংবা এসএসসিতে কম জিপিএ পাওয়া মেধাবী, পরিশ্রমী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রচেষ্টা প্রমাণে ব্যর্থ হবে।
করোনার কারণে যদি পরীক্ষা একেবারেই না নেয়া যায়, সেক্ষেত্রে নিজ নিজ কলেজে অনুষ্ঠিত টেস্ট পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রস্তুতের দাবি জানানো হয়েছে নোটিশে।
আগামী ৩ দিনের মধ্যে নোটিশে উল্লেখিত দাবি মানা না হলে শিক্ষার মৌলিক অধিকার আদায়ে হাইকোর্ট বিভাগে রিট করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, করোনার কাছে এবারের উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার বাতিল করা হয়েছে। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফল মূল্যায়ন করেই এবারের এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। এ ফল নিয়েই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে। জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শুরু করা হবে ভর্তি কার্যক্রম।
ফলে এইচএসসিতে এবার ফরম পূরণ করা নিয়মিত শতভাগ শিক্ষার্থীই উত্তীর্ণ হচ্ছে। এ ছাড়া গত বছর কাঙ্ক্ষিত ফল করতে না পারা মানোন্নয়নের এবং বিভাগ পরিবর্তনকারী পরীক্ষার্থীদেরও পাস করিয়ে দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা সরকারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে প্রাপ্ত মতামত আমলে নেয়া হয়েছে। এ পরীক্ষা আগে এক বেঞ্চে দুজন বসিয়ে নেয়া হলেও এখন নিতে হলে একজন বসাতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ জন্য কেন্দ্র বেশি লাগবে। পরীক্ষার পরিদর্শক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বোর্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বিগুণ করতে হবে। প্রশ্নপত্র কেন্দ্র অনুযায়ী প্যাকেট করা আছে। দ্বিগুণ কেন্দ্র করা হলে প্যাকেট ভেঙে আলাদা করা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তা সম্ভব নয়।
আবার বিষয় কমিয়ে পরীক্ষা নেয়া যেতে পারত। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের প্রতিটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে এ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে পরীক্ষার আগে বা পরীক্ষাকালে কোনো শিক্ষার্থী বা তার পরিবারের সদস্য কোভিডে আক্রান্ত হলে তার ক্ষেত্রে কী হবে।
এতসব বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষাসংক্রান্ত পরিকল্পনা তৈরি বড় চ্যালেঞ্জ।