কানাইঘাট লোভাছড়া চা-বাগানের শত বছরের দৃষ্টিনন্দন বাংলো আগুনে পুড়ে ছাই
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লোভাছড়া চা-বাগানে ব্রিটিশ আমলের শত বছরের পুরণো দৃষ্টিনন্দন নানকার বাংলো পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে। এতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে লোভাছড়া চা-বাগানের সত্ত¡াধিকারী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত জেমস্ লিও ফারগুশন নানকার ভাগ্না বাগানের দেখশোনার দায়িত্বে থাকা ইউসুফ ওসমান জানিয়েছেন।
জানা যায়, বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ছনের ছাউনিযুক্ত বাংলোঘরের চালা মেরামত কাজ করেন শ্রমিকরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিদ্যুতের একটি লাইন বাংলো ঘরের পাশে ছনের খড়ের উপর ছিঁড়ে পড়লে সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। কোনকিছু বুঝে উঠার পূর্বেই আগুনের লেলিহান শিখা পুরো বাংলোয় ছড়িয়ে পড়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন ও লোভাছড়া চা-বাগানের শ্রমিকরা আগুন নেভানোর জন্য চেষ্টা করলেও বাংলো ঘরটি রক্ষা করতে পারেননি। আগুনে পুড়ে বাংলো ঘরে থাকা চা-বাগানের সত্ত¡াধিকারী জেমস্ লিও ফারগুসন নানকার পূর্ব পুরুষদের অনেক দুর্লভ ছবি, দামী আসবাবপত্র এবং সমস্ত জিনিসপত্র সহ দু’টি রান্নাঘর পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে যায়। তবে অগ্নিকান্ডের সময় বাংলোয় কেউ অবস্থান না করায় কোন ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে কানাইঘাট ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলেও বাংলোর যাতায়াতের রাস্তা উচু থাকার কারনে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
ইউসুফ ওসমান জানান, বিদ্যুতের একটি লাইন ছিঁড়ে বাংলোর খড়ের চালার উপর পড়ে আগুন ধরে যায় এবং সেখান থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। বাংলো আগুনের খবর পেয়ে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার দ্রæত ফায়ার সার্ভিসকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশও দেন।
এদিকে শত বছরের পুরোণো বৃটিশ আমলের কানাইঘাটের ঐতিহ্যের স্মারক লোভাছড়া চা-বাগানের নানকার বিশাল বাংলোটি অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কানাইঘাট সহ দেশ বিদেশে অবস্থানরত নানা শ্রেণি পেশার লোকজন আক্ষেপ প্রকাশ করে পোস্ট করেছেন।
প্রসজ্ঞত যে, কানাইঘাট উপজেলার ব্রিটিশ আমলের প্রাচীণতম লোভাছড়া চা-বাগানের বাংলো কানাইঘাট তথা বৃহত্তর সিলেটের একটি এত্যিহ্য বহন করে আসছিল। এখানে দেশের প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা সহ ভ্রমন পিপাসু মানুষজন বাংলোর সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসতেন। মহান মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি বহনকারী এই বাংলোয় বাগানের বর্তমান সত্ত¡াধিকারী লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা জেমস্ লিও ফারগুসন নানকা সহ তার পরিবার এবং পূর্ব পুরুষরা ব্রিটিশ আমল থেকে বসবাস করে আসছিলেন।