সর্বশেষ

» কানাইঘাট গাছবাড়ীতে দেদারসে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ,ইউএনও বরাবর স্বারকলিপি প্রদান

প্রকাশিত: ১২. ফেব্রুয়ারি. ২০২৫ | বুধবার

কানাইঘাট প্রতিনিধি: কানাইঘাট গাছবাড়ীতে দেদারসে চলছে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ। এলাকার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে গাছবাড়ী বাজার সরকারি পুকুরপাড় থেকে অবৈধ দখলদেহী উচ্ছেদ, মাদক, গাজা ও ইয়াবার ব্যবসা বন্ধ করনের দাবিতে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষে জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ গতকাল মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন ৭ নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার মো: লোকমান উদ্দিন, ৮ নং ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার আবু বকর, গাছবাড়ী জামিউল উলূম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ তাহির উদ্দিন, গাছবাড়ি আইডিয়্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দিন আহমদ, গাছবাড়ী মডার্ণ একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মো: শফিকুর রহমান, গাছবাড়ী সামিট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুখতার আহমদ, গাছবাড়ী উত্তর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হামিদ উদ্দিন সালিক, সেক্রেটারি মেহেদি হাসান নাসির, ৭ নং দক্ষিন বানিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য সোলেমান আহমদ।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কানাইঘাট উপজেলাধীন গাছবাড়ী বাজারটি ১৭৯০ সালে সুরমা নদীর ডানতীরে স্থাপিত হয়। ভৌগলিক অবস্থান থেকে বাজারটি ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ও ৮নং ঝিংগাবাড়ী ইউপির মধ্যখানে অবস্থিত। একদিকে যেমন বাজারটি পূর্ব সিলেটের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার অন্যদিকে সেই বৃটিশ আমল থেকে বাজারটিতে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী মহিষের হাট। আলেম উলামা ও ওলি আউলিয়ার এলাকা হিসেবে পরিচিত বাজারটি এক সময় ধার্মিক ও শান্তিপ্রিয় জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কারণে বাজারটি অশান্তি অপরাধের জনপদ হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে। বিশেষ করে সরকারি পুকুরটি আগে একসনা ভাবে ইজার দেওয়া হলেও বর্তমানে সেটি ইজারা না দিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। যার কারণে সেখানে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করেছে বাবুল লাল, সাবিয়া ও লেটু নামের দু’জন ব্যক্তি। তারা সেখানে মাদক থেকে শুরু করে গাজা ও ইয়াবার মতো মরণগ্রাসী নেশা দ্রব্য বিক্রির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। প্রতিদিন বিকাল ৩টার পর থেকে সেখানে মদ, গাজা ও ইয়াবার বিক্রয় ও সেবন শুরু হয়। পুলিশের অপরাধ তালিকায় সরকারি পুকুরপাড়ের নামটি উঠে আসলে কানাইঘাট থানা পুলিশ কৃষ্ণ নামের একজনকে দুইবার গ্রেফতার করলে সে দীর্ঘদিন কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে আসে। জামিনে বেরিয়ে আসার পর আবার শুরু করে সেই অবৈধ মদ, গাজা ও ইয়াবার ব্যবসা। পাশাপাশি সেখানে শুরু করে যুবতী মেয়েদের দিয়ে সমাজ বিরোধী অবৈধ দেহ ব্যবসা। যার কারণে সরকারি পুকুর পাড় ঘেষে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা আস্তে আস্তে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ কর্মকান্ডে। উল্লেখ্য যে, সরকারি পুকুর পাড়ের ২০০ গজের মধ্যে রয়েছে ১৫০ বছরের পুরনো ঐতিবাহী গাছরাঁড়ী জামিউল উলুম কামিল মাদরাসা, গাছবাড়ী আইডিয়্যাল কলেজ, গাছবাড়ী মডার্ণ একাডেমী, গাছবাড়ী সামিট মাদ্রাসা, গাছবাড়ী মহিলা দাখিল মাদরাসা, গাছবাড়ী পাবলিক স্কুল গাছবাড়ী মেরিট গার্টেন, গাছবাড়ী ইউনাইটেড কিন্ডরাগার্টেন এন্ড স্কুল, গাছবাড়ী ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, গাছবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাছবাড়ী রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গাছবাড়ী, গাছবাড়ী কেয়ার হাসপাতাল, গাছবাড়ী আইডিয়‍্যাল ডায়গনস্টিক সেন্টরসহ প্রায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারি পুকুরপাড়ের নেশায় দিন দিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে। কানাঘাট উপজেলার সাবেক ইউএনও তাহসিনা বেগম মহোদয় একবার সরজমিন এসে এসব অপরাধের সত্যতা পেয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে সমূহ অপরাধীদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করেন। পরবর্তীতে তিনি চলে যাওয়ার পর এলাকার কিছু প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তারা আবারো সরকারি পুকুরপাড়ে এসে বসতি স্থাপন করে এবং শুরু করে তাদের সেই পুরনো অপরাধ কর্মকান্ড। তাদের এমন কর্মকান্ডের খবর পেয়ে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা মহোদয়ও একইভাবে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে এখান থেকে উচ্ছেদ করেন এবং কৃষ্ণ দাস নামের একজনকে ১ মাসের কারাদন্ডও দেন। ১ মাস পর সে ছাড়া পেয়ে যায় এবং তানিয়া সুলতানাও কানাইঘাট থেকে চলে যান। তিনি চলে যাওয়ার পর তারা আবারও শুরু করে তাদের সকল ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড। যা দিন দিন ঐতিহ্যবাহী ধর্মপ্রান এই জনপদকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বর্তমানে সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে বাবু লালের স্ত্রী রেখা রানী দাস তাঁর ২টি যুবতী পুত্র বধু দিপালী দাস, সিস্তী দাস ও তাহার ১টি ভাগনি সাবিত্রী রানী দাসকে দিয়ে গড়ে তুলেছে দেহ ব্যবসার মতো সমাজবিরোধী ঘৃন্য অপরাধকান্ড। সাবিত্রী রাণী আবার কলেজের এবং দিপালী রানী মডার্ণ একাডেমীর আয়া হিসেবে কর্মরত আছে। তার এই অবৈধ কর্মকান্ডের কারণে হিন্দু সমাজ তাদেরকে বাড়ী থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে কয়েক বছর পূর্বে। পরবর্তীতে সাবিত্রী রানী সরকারি পুকুরপাড়ের পাশেই অবৈধভাবে বসতি গড়ে তুলে এবং দিপালী ও সিন্তী রানী সরকারি পুকুর পাড়েই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের দেহ ব্যবসার মতো সমাজ বিরোধী অপরাধ। যা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রদের চরিত্র ধ্বংস করে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে এদেরকে সরকারি পুকুর পাড় থেকে উচ্ছেদ করা প্রয়োজন।

উপরোক্ত বিষয়গুলো সরজমিন তদন্ত পূর্বক সমূহ অবৈধ দখলদেহী ও সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধে অপরাধীদের সরকারি পুকুর পাড় থেকে উচ্ছেদ, মদ, গাজা ও মরণগ্রাসী ইয়াবার ব্যবসা বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতা কামনা করা হয়।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

February 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728