নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে: ইউপি মেম্বারসহ আরও গ্রেফতার ২

চেম্বার ডেস্ক:: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে সোহাগসহ (৪২) আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

সোমবার রাতে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার ৪নং আসামি সাজু ও বেগমগঞ্জ উপজেলার এখলাসপুর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

 

নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি জানান, রাতে অভিযান চালিয়ে উপজেলার এখলাছপুর এলাকা থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সোহাগ এজাহারভুক্ত আসামি নন।

 

বেগমগঞ্জ থানার ওসি হারুন রশীদ চৌধুরী জানান, বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ সোমবার রাতে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার ৪নং আসামি সাজু ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সোহাগকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার ভোরে থানায় নেয়া হয়েছে।

 

সোহাগ মেম্বার মামলার আসামি না হলেও তিনি ঘটনা জেনেও তা গোপন রেখে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া দোলোয়ার বাহিনীকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

এর আগে রোববার রাতে মামলার ১নং আসামি বাদলকে ঢাকা থেকে ও স্থানীয় দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং লিডার এবং দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করে র‌্যাব-১১।

 

আটক বাদল (২২) এখলাসপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মধ্যম এখলাসপুর গ্রামের মোহর আলী মুন্সিবাড়ির রহমত উল্যার ছেলে, দেলোয়ার একই গ্রামের কামাল উদ্দিন বেপারিবাড়ির সাইদুল হকের ছেলে।

 

এ ছাড়া এখলাসপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের খালপাড় এলাকার হারিদন ভূঁইয়াবাড়ির শেখ আহম্মদ দুলালের ছেলে মো. রহিম (২০) ও একই এলাকার মোহর আলী মুন্সিবাড়ির মৃত আবদুর রহিমের ছেলে মো. রহমত উল্যাহকে (৪১) গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

এদিকে নির্যাতিত নারী বাদী হয়ে সোমবার রাতে ৭-৮ জন অজ্ঞাতনামাসহ ৯ জনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি আইনে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেছেন। এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একই থানায় ওই ব্যক্তিদের আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়।

 

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব ১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম।

 

তিনি সোমবার সকালে টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, বাদলকে রোববার দিবাগত রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যা ব। আর দেলোয়ারকে নারায়ণগঞ্জের চিটাগং রোড থেকে রাত ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১।

 

প্রসঙ্গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার এখলাসপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকায় ওই গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রাখেন স্থানীয় বাদল ও তার সহযোগীরা। এর পর গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তারা। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তারা বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। সেটি ছড়িয়ে দেয় ইন্টারনেটে। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

 

রোববার রাত ১টার দিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নির্যাতিত গৃহবধূ (৩৫) বাদী হয়ে মামলা করেন।