কানাইঘাটে পাথর নিলামকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ : আহত ২০

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর জব্দকৃত পাথরের নিলাম নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে যেকোন সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। কোয়ারীর পাথর নিলামকে কেন্দ্র করে নিলামের পক্ষে ও বিপক্ষের বিএনপির দু’টি গ্রæপের লোকজন গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে সীমান্তবর্তী সুরইঘাট বাজারে লাঠি-সোটা নিয়ে পাল্টাপাল্টি মিছিল বের করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৪ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বাজারে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২১ সালে লোভাছড়ার জব্দকৃত পাথর সম্প্রতি খনিজ সম্পদ ব্যুারোর মাধ্যমে নিলাম দেয়া হয়। এতে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সিলেটের পিয়াস এন্টারপ্রাইজ জব্দকৃত ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথরের নিলাম পান। কিন্তু উক্ত নিলামের বিপক্ষে অবস্থান নেন বিএনপি ও জামায়াতের বড় অংশের নেতৃবৃন্দ। তারা পিয়াস এন্টারপ্রাইজের মালিক লাহিম আহমদকে আওয়ামীলীগের দোসর আখ্যায়িত করে কোয়ারী থেকে নিলামকৃত পাথর পরিবহন করতে দিবে না এবং পাথরের নিলাম বাতিলের দাবীতে কোয়ারী এলাকা সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল মিটিং করে আসছেন।
অপরদিকে নিলামদাতা পিয়াস এন্টারপ্রাইজের লোকজনদের পক্ষ নিয়ে এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে নিলামকৃত পাথর পরিবহনের পক্ষে বিএনপির একাংশ সহ আওয়ামীলীগপন্থী পাথর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেয়ায় এ নিয়ে যেকোন সময় জব্দকৃত পাথরের নিলামকে কেন্দ্র করে পক্ষে ও বিপক্ষে লোকজনদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে সচেতন মহল জানিয়েছেন।
পাথর কোয়ারী খোলে দেয়া সহ নিলামকৃত পাথর পরিবহনের পক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন মেম্বার ও বর্তমান ইউপি সদস্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম পক্ষের বিএনপির নেতাকর্মী সহ এলাকার অনেকে সুরইঘাট বাজারে মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে পাথর নিলামের বিরোধীতাকারী বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা বাজারে পাল্টা মিছিল বের করলে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে লাঠি-সোটা নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান মাও. জামাল উদ্দিন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিএনপির উভয় পক্ষের লোকজনদের নিয়ে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বৈঠকে বসেছেন বলে জানা গেছে।
কোয়ারীর পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিক শ্রেণির লোকজন জব্দকৃত পাথর নিলাম নিয়ে যাতে করে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
থানার ওসি আব্দুল আউয়াল জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় আছি।