পদ ধরে রাখতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিশ্বনাথের ৮ ইউপি চেয়ারম্যানের স্মারকলিপি

চেম্বার ডেস্ক: অপসারণ না করে মেয়াদকাল পর্যন্ত ‘ইউনিয়ন পরিষদ’র জনপ্রতিনিধিদের স্বপদে বহাল রাখার দাবিতে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুছ বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ৮ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যানবৃন্দ তাদের ও ই স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল আহমদ মতছিন, লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খান, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলী গণি, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজ আরব খান, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান লিটন, বিশ্বনাথ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দয়াল উদ্দিন তালুকদার।

স্মারকলিপিতে বিশ্বনাথে জনপ্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রে নাগরিক সেবায় প্রান্তিক ও সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘ইউনিয়ন পরিষদ’। এখানে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, উত্তরাধিকারী সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, প্রত্যয়নপত্র, চারিত্রিক সনদ, নাগরিক সনদ, পূর্বে জাতীয় সনদপত্র করেন নাই মর্মে প্রত্যয়নপত্র, অবিবাহিত সনদ ও অভিভাবক সম্মতিপত্র’সহ বহু ধরনের নাগরিক সেবা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করেন ‘ইউনিয়ন পরিষদ’র চেয়ারম্যান মেম্বারবৃন্দরা। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সরাসরি কাজ করেন ওই বিভাগের জনপ্রতিনিধিরা। এছাড়া গ্রাম আদালত পরিচালনাসহ ঝগড়া-বিরোধ নিরসনের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ‘বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধি, মা-শিশু সুরক্ষা ভাতা, ই.ড.ই উপকারভোগী নির্বাচন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নিশ্চিত করণে ভিজিএফ, ওজি-চাল, কৃষি উন্নয়নে প্রকৃত কৃষককে প্রণোদনার জন্য সঠিক উপকারভোগী নির্বাচন করা এবং শীতবস্ত্র বিতরণসহ সময়ে সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত যে কোন নাগরিক সেবা-সুবিধা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ‘ইউনিয়ন পরিষদ’র চেয়ারম্যান-মেম্বারবৃন্দরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন। এসব কেবল তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ‘চেয়ারম্যান-মেম্বার’র মাধমেই সম্ভব হয়।

স্মারকলিপিতে আরোও উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি সময়ে ‘সরকার’ দেশের ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ করবে মর্মে বিভিন্ন খবর প্রচারে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বিগ্নতা বাড়ছে। সাধারণ মানুষ মনে করে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দিলে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক জনগণের মধ্যে প্রদত্ত সকল প্রকার নাগরিক সেবার মান মুখ থুবড়ে পড়বে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদের ‘চেয়ারম্যান- মেম্বার’বৃন্দরা সর্বদা সরকারের নির্দেশ-নির্দেশনা মেনেই সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার জন্য বদ্বপরিকর। ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা স্ব-স্ব পদে থেকে থেকে বৈষম্যবিরোধী ও মেধাভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, মানবিক রাষ্ট্রগঠনে সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। জনপ্রতিনিধিগণের কেউ কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকলে কিংবা স্বীয় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে সেই সকল জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘ইউনিয়ন পরিষদ’ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করাকে সাধুবাদ জানাবেন তারা।

স্বারকলিপিতে ইউনিয়ন পরিষদের ‘চেয়ারম্যান-মেম্বারগণ’ অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে মেয়াদকাল পর্যন্ত স্ব-স্ব পদে বহার রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন।