প্রায় এক দশক পর সিলেট ফিরে ভালোবাসায় সিক্ত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল
চেম্বার ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সিলেটের সন্তান সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। হাসিনা সরকারের পতনে প্রায় এক দশক পর আজ জন্মমাটিতে ফিরেছেন তিনি।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুশফিকুল ফজল সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌছাঁন। পরে তিনি মহানগরের মানিক পীর টিলায় স্বজনদের কবর জিয়ারত করে বাসায় যান।
সিলেটে বিমানবন্দরে তিনি আসলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন।
এসময় তিনি বলেন, ‘আমি আমার জন্মভূমিতে আসতে পেরেছি- এটাই মহান আল্লাহর সবচাইতে বড় শুকরিয়া।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরশাসকের পতনের বিপ্লবকে সফল করতে গিয়ে যেসব ছাত্রভাই নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। যারা আহত অবস্থায় আছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। হতাহতদের শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। এখন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সমৃদ্ধ ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সক্ষম হবো।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে একটি ফ্লাইটে মুশফিকুল ফজল যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ৯ বছর পর দেশে ফিরে আবেগাপ্লুত আনসারীকে এয়ারপোর্টের ভিতরেই সিজদা দিতে দেখা যায়।
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বাচন জালিয়াতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা নিয়ে প্রায়ই জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাইসের প্রেস কনফারেন্সে প্রশ্ন করতেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের শেষ কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন তিনি। তবে তার এ পর্যায়ে যাওয়াটা মোটেও সহজ ছিল না। সাহসী সাংবাদিকতা করতে গিয়ে তৎকালীন সরকারের রোষানলে পড়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাকে।
মুশফিকুল ফজল আনসারী যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাস্ট নিউজ বিডি ডটকমের সম্পাদনার পাশাপাশি স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘের সদরদপ্তর ও হোয়াইট হাউজে দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলে ধরে নানা প্রশ্ন করতেন। এর আগে সাংবাদিকতায় সাহসী ভূমিকার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে ২০১৫ সালে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ ছাড়া দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনীতিক প্রতিবেদক ছিলেন তিনি। বার্তা সংস্থা ইউএনবিসহ আরও কয়েকটি মিডিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের কনসালট্যান্টও ছিলেন। ব্রিটেনের দ্য টাইমস ও সানডে টাইমস পত্রিকায় ওয়ার্কএক্সিপিরিয়েন্স রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে একটি অনুষ্ঠান অ্যাঙ্কর করেছেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এনটিভিতে জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘হ্যালো এক্সেলেন্সি’ হোস্ট করেছেন। এতে রাষ্ট্রদূত এবং বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা থাকতেন। তিনি মানবাধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক। অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম বি মাইলাম সম্পাদিত বৈদেশিক নীতি ম্যাগাজিন সাউথ এশিয়া পারসপেক্টিভসেরও নির্বাহী সম্পাদক।
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বাচন জালিয়াতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা নিয়ে প্রায়ই জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাইসের প্রেস কনফারেন্সে প্রশ্ন করতেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের শেষ কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন তিনি।