শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ব্লু-বার্ডের অধ্যক্ষের পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক :   শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদ ছাড়তে বাধ্য হলেন সিলেটের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুসনেআরা বেগম। রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন নানা অভিযোগে অভিযুক্ত এই শিক্ষক।

অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে গেল কয়েক দিন ধরেই ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন করছেন। রোববার সকাল থেকে আন্দোলন প্রকট আকার ধারন করে। সকাল থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা অধ্যক্ষকে তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে বাধ্য হয়ে অধ্যক্ষের পদ থেকে অব্যাহতি নেন হুসনে আরা বেগম।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এদিন কলেজের গণিতের শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল ক্যাম্পাস থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যান। এসময় কিছু শিক্ষার্থী মারমুখি হলে অন্যরা তাকে আগলে রিকশায় তুলে দেন বলে জানান উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।

অধ্যক্ষ হুসনেআরা বেগম ও শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল আওয়ামী লীগ-পন্থী এবং তারা নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করে, তাদেরকে আর এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখতে চান না বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা জানান, ব্লু বার্ড হাইস্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ হুসনে আরার শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকা সত্ত্বেও লবিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হোন। তিনি মাসের পর মাস স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন স্কুল চালিয়েছেন তার প্রিয়ভাজন সিন্ডিকেটেরা। বেতন ৫ম গ্রেডের হলেও তিনি অবৈধভাবে ৪র্থ গ্রেডের বেতন তুলতেন। পাশাপাশি তিনি প্রতিমাসে আরো অতিরিক্ত ৮০০০ টাকা বেতন তুলতেন।

হাসিনা সরকারের আমলে তিনি স্কুলের বেশিরভাগ কাজ সরকারি টেন্ডারের মাধ্যমে করাননি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে কমিশন দিয়ে প্রতিটা প্রজেক্টে ৬০-৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ করেন। সরকার পতনের পরও হাসিনা ফ্যাসিস্ট এর ছবি প্রিন্সিপাল রুমে টাঙানো ছিলো। প্রতি বছর ভর্তি বাণিজ্য ও শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেন প্রিন্সিপাল ও তার সিন্ডিকেট। প্রি নার্সারিতে ভর্তির জন্য ২০,০০০-৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত নেয়ার অভিযোগ উঠছে। ক্রীড়া পরিষদ থেকে কোনো ফান্ডিংই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যাবহার হয় না। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতায় দুটি কম্পিউটার গায়েব করে। গত বছর সাইন্স ফেয়ারের প্রাইজমানি ৬০ হাজার টাকাও আত্মসাৎ করে এই সিন্ডিকেট।

তারা জানান, আমরা কয়েকজন যখন প্রাথমিক অভিযোগের লিস্ট করি, তখন ৪০-৫০ টা অভিযোগের লিস্ট হয়। এখান থেকে শুধুমাত্র আর্থিক স্ক্যামগুলো তুলে ধরা হলো।