সর্বশেষ

» ছাত্রলীগ-পুলিশ-শিক্ষার্থীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র জাহাঙ্গীরনগর

প্রকাশিত: ১৬. জুলাই. ২০২৪ | মঙ্গলবার

চেম্বার ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। পুলিশের উপস্থিতিতে সেখানে ঢুকে তাদের মারধর করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বিভিন্ন হল থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর চড়াও হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল-রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে দায়িত্ব পালন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন।

সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ১টার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এতে বহিরাগতসহ ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটক ছেড়ে রাস্তায় চলে যান। পরে রাত পৌনে একটার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। এ সময় বেশ কয়েকটি পেট্রলবোমা ছুড়ে বাসভবনের প্রধান ফটকের লাইটসহ বিভিন্ন লাইট ভাঙচুর করেন তারা। এরপর আন্দোলনকারীদের ব্যাপক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় উপাচার্য বাসভবনেই ছিলেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলাকারী ব্যক্তিদের অধিকাংশের মাথায় হেলমেট ও হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এ সময় দুটি পেট্রলবোমা ছুড়তে দেখা যায় তাদের। হামলা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নেন। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের আক্রমণের আশঙ্কায় উপাচার্যের বাসভবনের ভেতর আশ্রয় নেন। এ সময় ছাত্রলীগ গেটের বাইরে অবস্থান নিয়ে শোডাউন শুরু করে। ২০ মিনিট পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও ছাত্রলীগকে বাধা দেয়নি। একপর্যায়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ফোন কলে কারও সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ভিতর থেকে গেট খুলে দেওয়া হলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ওপর নারকীয় নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

পরে রাত সোয়া দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্য বাসভবনের দিকে আসেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে সেখানে অবস্থানরত পুলিশের ওপর চড়াও হন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী এলাকায় এসে অবস্থান নেয়। এ সময় ভোর পাঁচটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় তাদের ওপর হামলা হয়। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্রছাত্রী আহত হন। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে ও অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বিতাড়িত করতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031