সর্বশেষ

» ‘আহত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী, আন্দোলন অব্যাহত থাকবে’

প্রকাশিত: ১৫. জুলাই. ২০২৪ | সোমবার

চেম্বার ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নেমে ছাত্রলীগের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে রড-বাঁশ-স্ট্যাম্পসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিচ্ছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় তাদের কোটা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, ভিসি চত্বর এলাকায় ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভিসি চত্বরের সামনে প্রথমে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর দফায় দফায় হামলা-পাল্টা হামলা চলতে থাকে। এক পর্যায়ে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে ছাত্রলীগের আরও কয়েকটি মিছিল থেকে ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুখোশে ছাত্রদল-শিবিরের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিরোধ করে। এতে অসংখ্য ছাত্রলীগ কর্মীও হামলার শিকার হন। তবে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ হামলা করেছে। এ হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে বঙ্গবন্ধু হলের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্ত। তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগ শুরুতে হামলা করেছিল।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান শান্ত বলেন, আমরা প্রথম দিকে কোটা আন্দোলনকারীদের সুযোগ দিয়েছি কিন্তু যখনই আন্দোলন শিবির-ছাত্রদল মিলে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ নেয় তখন ছাত্রলীগ তাদের প্রতিহতের সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা কোনোভাবেই প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা সহ্য করব না।
হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ আগে হামলা চালায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন তাদের (ছাত্রদল-শিবির) হামলায় আহত হয়েছে, তখনই সবাইকে নিয়ে ছাত্রলীগ প্রতিরোধ গড়েছে।

এর আগে বিকেল ৩টা থেকে মুখোমুখি অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সরেজমিনে আরও দেখা যায়, হলপাড়ার দিকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। মুহূর্তেই ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিজয় একাত্তর হলে অবস্থান নেন। পরে তারা হলের তালা লাগিয়ে ভেতর থেকে ইট ছুড়তে থাকেন। শিক্ষার্থীরাও হলের দেয়ালের ওপর দিয়ে পাল্টা ইট ছুড়তে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা হল গেটে হামলা চালিয়ে লোহার গেটে ধাক্কা দিতে থাকেন।
অন্যদিকে ছাত্রলীগের আরেকটি দলকে হেলমেট পরে বিজয় একাত্তর হলের গেটের কাছাকাছি অবস্থান করতে দেখা যায়। এ ঘটনায় এক সাংবাদিক আহত হন। বিজয় একাত্তর হল থেকে ছোড়া একটি ইট এসে তার বুকের বাম পাশে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাঠে লুটিয়ে পড়েন। এর কিছু সময় পর হকিস্টিক, রড, স্টাম্প হাতে বঙ্গবন্ধু, জিয়া ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হন আন্দোলনকারীরা। তারপর আবার চলতে থাকে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া।

এ ছাড়া বিকেল ৩টার পর সরকারি চাকরিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন। এরপরই ছাত্রলীগের হামলায় শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

April 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930