শিক্ষকদের সমস্যার অচিরেই সমাধান, ছাত্রদের ধৈর্য ধরতে বললেন কাদের
চেম্বার ডেস্ক: দেশে ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভিন্ন ইস্যুতে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শিক্ষকদের সমস্যার অচিরেই সমাধান হবে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে আদাতলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে বলেছেন।
আজ মঙ্গলবার মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে এ মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমস্যা অচিরেই সমাধান হবে বলে মনে করছি।
সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের যে আন্দোলন চলছে, আজকে কর্মসূচি না রাখায় ধন্যবাদ জানাই। শুনেছি উচ্চ আদালতে লড়াইয়ের জন্য তাঁরা (শিক্ষার্থীরা) আইনজীবী নিয়োগ করেছে, এটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত মনে করছি। সব পক্ষের কথা শুনে, সর্বোচ্চ আদালত বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেবে, প্রত্যাশা করি। সে পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতে বলব।
এ আন্দোলনে বিএনপির সমর্থনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, অরাজনৈতিক আন্দোলনে বিএনপি ও সমমনাদের রাজনৈতিক সমর্থন নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এই অশুভ মহল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ছাত্রলীগকে সতর্কভাবে পরিস্থিতি দেখতে হবে।
তিনি বলেন, চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং শিক্ষকদের পেনশন ইস্যু নিয়ে আন্দোলন সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কবে আনুষ্ঠানিকভাবে বসবেন এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসব আমরা কি বলেছি?’
শিক্ষকরা বলেছেন বলে সাংবাদিকরা উত্তর দিলে মন্ত্রী বলেন, এখন তারা কি বললো সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদেরও তো অসুবিধার বিষয় থাকতে পারে। আমরা তাদের প্রতি কোনো প্রকার অসম্মান করছি না। আমরা তাদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছি। সময়মতো এর সমাধান হয়ে যাবে এটাই আমরা আশা করি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। পাশাপাশি পেনশনের বিষয়ে শিক্ষক সমাজেরও আন্দোলন, কর্মবিরতি চলছে। এই দুটি কর্মসূচি চলমান অবস্থায় আমরা খুব সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যতটুকু জানি, কোটা সংস্কারবিরোধী যে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা করছে তাদের আজকে নির্ধারিত কর্মসূচি নেই, সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এমনও শুনেছি, তারা উচ্চ আদালতে যে মামলা তাদের পক্ষ থেকে ল’ইয়ার নিয়োগ করেছে এবং তারা আদালতে যথাসময়ে হাজির হবেন। এটা একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
আওয়ামী লীগের অবস্থান পরিষ্কার জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী পরিপত্র জারি করে কোটামুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এতদিন সরকারি কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৭ জন একটা মামলা করেন। হাইকোর্ট একটা রায় দেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ নিয়মানুযায়ী আপিল হয়েছে। ফুলকোর্টে আমরা আশা করছি শীঘ্রই শুনানি হবে।
কোটাবিরোধী নয়, কোটা সংস্কারে আন্দোলন হচ্ছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, সরকারের অবস্থান পরিষ্কার। যারা আন্দোলন করছেন, আমাদের বিভিন্ন মিডিয়া কোটাবিরোধী আন্দোলন, তবে তারা যেটা বলছে কোটা সংস্কার চায়।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি সব কিছুতে রাজনৈতিক গন্ধ পায়। আইনি লড়াই তারা ঠিকমতো করেনি। মাসের পর মাস এমনকি বছর কেটে গেছে তাকে (খালেদা) উপস্থিত হতে দেননি, জামিনও চাননি। তারা আইনি লড়াইয়ে ব্যর্থ। তারা এই শহরে দৃশ্যমান একটা বিক্ষোভ মিছিল খালেদা জিয়ার জন্য করেছে এমন প্রমাণ আমাদের সামনে নেই।’
বিএনপি বলছে প্রধানমন্ত্রী ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে চীন গেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে প্যারিস কনসোর্টিয়াম বৈঠকে তাদের অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বার বার ছুটে গেছেন, আমাদের কোন অর্থমন্ত্রী প্যারিস কনসোর্টিয়াম বৈঠকে জাননি। বাজেটের আগেও জাননি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, শোকের মাস আগস্ট আসছে। ১ আগস্ট থেকে আমাদের মাসব্যাপী কর্মসূচি রয়েছে। ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে এই মাসের কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ঢাকায় যারা কর্মসূচি নেবেন তারা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে করবেন।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদ ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।