আম্বরখানায় অপহরণ করে যুবক হত্যার রহস্য উদঘাটন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরীর আম্বরখানা এলাকায় গোলাপগঞ্জের যুবক আবুল হাসান (২৮) কে অপহরণ ও পরে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই হত্যার সাথে জড়িত রায়হান আহমদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে কোতোয়ালী মডেল থানাধীন কাজীটুলা মক্তবগলি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঐ আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রায়হান নগরীর কাজীটুলা মক্তবগলির উবায়দুল হকের পুত্র।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৮জুন) রাতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের কলাশহর পূর্ববাগ গ্রামের মৃত ইলিয়াস আলীর ছেলে আবুল হাসান ও তার চাচাতো ভাই মিনহাজ আহমদ একটি হাসপাতালে তার অসুস্থ বোনকে দেখতে সিলেট শহরে আসেন। এরপর তারা ওভারব্রিজ থেকে একটি সিএনজিতে উঠেন। এসময় সিএনজি চালক ও সিএনজিচালিত গাড়িতে থাকা অপর যাত্রী আবুল হাসান ও চাচাতো ভাই মিনহাজ আহমদকে চৌহাট্টাস্থ মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে না নিয়ে আম্বরখানাস্থ হোটেল হিমেলের গলি দিয়ে আলহাজ শেখ সামসুল আলমের বাসার (বাসা নং-ওয়েভস্ বি-৯৭/১) ৫ম তলা ভবনের ছাদে নিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভবনের ছাদে থাকা অপর আসামীরা আবুল হাসান ও মিনহাজ আহমদকে কিল ঘুষি মেরে তাদের কাছ থেকে নগদ ৩ হাজার টাকা ও তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এসময় তারা এলোপাথাড়ি মারধর করে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এসময় তাদেরকে চাঁদা না দিলে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার হুমকী দিয়ে চাকু ধরে ভয় দেখিয়ে ছাদের এক কোনায় নিয়ে যায়। সেখানে আবুল হাসানের সাথে আসামীদের ধস্তাধস্তির এক পর্যায় আসামিরা আবুল হাসানকে ছাদ থেকে ধাক্কা মারলে আবুল হাসান নিচের একটি টিনশেড বাসার উপর পড়ে সেখান থেকে মাটিতে পড়ে যান।
তখন আসামিরা বিল্ডিংয়ের ছাদ হতে নেমে যে যার মতো করে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। আবুল হাসান এর চাচাতো ভাই মিনহাজ সাথে সাথে বিল্ডিংয়ের ছাদ হতে নিচে নেমে আশপাশের উপস্থিত লোকজনদের সহায়তায় আবুল হাসানকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দরগা গেইটস্থ নুরজাহান হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসানের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে দ্রুত ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। ওসমানী হাসপাতালে আইসিউতে সিট না থাকায় তাকে দ্রুত সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উইমেন্স হাসপাতালে আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবুল হাসান ঐদিন রাত ২টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই খালেদ আহমদ বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা (মামলা নং-২৬, তাং-২১/০৬/২০২৪ইং) দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ বিষয়টির তদন্তে নামে। এক পর্যায়ে পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত রায়হান আহমদকে গ্রেপ্তার করে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মঈন উদ্দিন সিপন জানান, গ্রেপ্তারকৃত রায়হান আহমদ আদালতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাকি আসামীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করেছে। তার তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামীদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।