সিলেটের পূর্বঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশ কর্তৃক চালক হয়রানী বন্ধ, ভারতীয় চিনি চোরা কারবারিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার, বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুতে অযৌক্তিক টোল আদায় বন্ধ, দেড় বছর যাবৎ নবায়নের জন্য জমাকৃত লাইসেন্স দ্রুত ডেলিভারী, রেকারের নামে পুলিশের চাদাবাজী বন্ধ ও সিলেট বিভাগে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ সহ ১৩ দফা দাবীতে সিলেটে পূর্বঘোষিত ২৫ জুন মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকীর সাথে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি (রেজিঃ নং-বি/১৭২৪) নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষ থেকে বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৫ জুন থেকে পূর্বঘোষিত পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। পরবর্তী দাবীসমূহ বাস্তবায়ন করা হবে মর্মে আশ^াস প্রদান করা হয়।
উক্ত আশ^াসের প্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ¦ মইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ সজিব আলী পূর্বঘোষিত পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করেন।
এব্যাপারে ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ¦ মইনুল ইসলাম বলেন, আমরা ১৩ দফা দাবী জানিয়ে গত ১৩ জুন বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি । উক্ত স্মারকলিপিতে আমাদের দাবী মেনে নেয়া না হলে ২৫ জুন থেকে সিলেটে পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ জুন) সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় আমাদেরকে ডাকেন। আমরা মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে আমাদের দাবী উত্থাপন করি। তিনি আমাদের দাবী শুনেন এবং পরবর্তীতে দাবী বাস্তবায়নের আশ^াস দেন। বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। এর প্রেক্ষিতে মানবিক বিবেচনায় আমরা পূর্বঘোষিত শ্রমিক কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করেছি। পরবর্তীতে আমাদের দাবী মানা না হলে আমার আবারো কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবো।
আমাদের ১৩ দফা দাবী হচ্ছে- পুলিশ কর্তৃক পরিবহন শ্রমিকদের হয়রানী নিত্যনৈমত্তিক ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় চিনি চোরা কারবারিরা পুলিশের যোগসাজশে চিনি পাচার করলেও নিরীহ চালককে গ্রেফতার ও আসামী করে মামলা করা হচ্ছে। অথচ চোরা কারবারিরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা নেই। রোগী ও যাত্রীদের সেবা করতে গিয়ে নিরীহ চালকদেরকে পার্কিং মামলা দেয়া হচ্ছে। ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় চালকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন সেতুতে অযৌক্তিকভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া টোল আদায়ের নামে বিভিন্ন পৌরসভায় চাদাবাজী চলছে। দেড় বছরের বেশী সময় ধরে লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করলেও আজ অবধি লাইসেন্স দেয়া হচ্ছেনা। বিআরটিএ অফিসকে দালালমুক্ত করতে হবে। উপজেলা ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করতে হবে। সিলেট বিভাগের সকল জেলায় ২৪ ঘন্টা গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। সড়ক ও জনপথের অব্যবহৃত খালি জায়গায় অস্থায়ীভাবে পার্কিং স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি প্রদানসহ অবৈদ দখলদার মুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবী যৌক্তিক। আমরা বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের আশ^াসে বন্যার কারণে মানবিক বিবেচনায় পূর্বঘোষিত পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করেছি। স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের দাবী মানা না হলে আবারো কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।