কানাইঘাটে আন্দোলনকারীদের হাতে আহত ট্রাক চালকের মৃত্যু, ৩ মামলা
কানাইঘাট প্রতিনিধি: কানাইঘাটে আন্দোলনকারীদের হাতে আহত ট্রাক চালকের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম ফলিক মিয়া। বাড়ি রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের তালবাড়ী গ্রামে। তিনি রাজাগঞ্জের আফসর আহমদের ইটভাটায় ট্রাক চালক হিসেবে কাজ করতেন।
জানা যায়, রাজাগঞ্জের আফসর আহমদের পারিবারিক ইটভাটায় ইটের ধোঁয়ায় পরিবেশ ও বায়ু দূষণ হচ্ছে৷ সম্প্রতি বায়ু দুষিত রোগে ৩ শিশু মারা যায় ও অনেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এতে করে এলাকার লোকজন আতংকিত হয়ে পড়ে।
“রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন” পরিবেশ ধ্বংসকারী ইটভাটা বন্ধের দাবীতে সামাজিক আন্দোলন শুরু করে।
গত সোমবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার রাজাগঞ্জ বাজারে রাজাগঞ্জ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এক বিশাল মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধন শুরু হওয়ার সময় কানাইঘাট থানা পুলিশের একটি দল সমাবেশস্থলে এসে প্রোগ্রামে বাঁধা প্রদান করে। এতে করে উত্তেজিত জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে উত্তেজিত জনতাও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল, ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে আন্দোলনকারীরা পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাবার পথে রাস্তায় ইটভাটার একজন ট্রাক চালকের গাড়ি আটকিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে করে ট্রাক চালকের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ট্রাক চালকের উপর হামলা করেন আন্দোলনকারীরা। এতে চালক গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে রাতেই মৃত্যের কোলে ঢলে পড়েন।
ট্রাক চালক ফলিক মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ইট ভাটার মালিক আফসর আহমদ চৌধুরী বাদী হয়ে ১৭ জনের নামে ও অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামীরা হলেন মির্জারগড় গ্রামের সাফিকুর রাহমানের ছেলে মাহমুদুল হাসান, একি গ্রামের মস্তকিন আলির ছেলে দেলোয়ার হোসেন,কোনাগ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রায়হান আহমেদ,খালপার গ্রামের আনফর আলির ছেলে নাজির আহমেদ,মইনা গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে সালমান আহমদ,একি গ্রামের মনাই মিয়ার ছেলে জহির রায়হান, রাজাগঞ্জ গ্রামের মদরিছ আলীর ছেলের সাদিক আহমদ,ছোট মির্জারগড় গ্রামের পাকি মিয়ার ছেলে, আনোয়ার হোসেন, নয়া গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে হুসাইন আহমদ, বীরদল গ্রামের মঞ্জুর মিয়ার ছেলে সিদ্দিক আহমদ, কোনাগ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আব্দুল্লাহ আদনান, মির্জারগড় গ্রামের কটই মিয়ার ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান, পারকুল গ্রামের কারিম মিয়ার ছেলে রামিল আহমদ, কোনাগ্রামের ইমরান আহমদের ছেলে রামিল এনাম,খোয়াজ পুর গ্রামের লিয়াখত আলির ছেলে মাসুদ আহমদ, তাল বাড়ি গ্রামের আসকর আলির ছেলে
সুলতান আহমদ, গাজিপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে মারুফ আসরাফ।
অন্যদিকে, পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে কানাইঘাট থানার এস আই আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছেন।
অপরদিকে রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা করেছেন রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিলাল আহমদ।
ট্রাক চালকের মৃত্যু ও অপর দুটি মামলার কারনে রাজাগঞ্জ এখন অনেকটা পুরুষ শূন্য।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, রাজাগঞ্জের একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ৩টি মামলা হয়েছে, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।