- কানাইঘাটে ‘প্রভাতী সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ’র ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
- কানাইঘাটে ফের হত্যাকান্ড || দোকান থেকে আইসক্রিম বিক্রেতার লাশ উদ্ধার
- বৃহত্তর জৈন্তিয়া কল্যাণ পরিষদের আহবায়ক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত
- ইকরা ট্রাভেলস-সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
- ২৩ নভেম্বর সিলেটে জমিয়তের গণসমাবেশ সফল করুন: সিলেট জমিয়ত
- খুনিকে গ্রেফতারে পুলিশের চিরুনী অভিযান|| কানাইঘাটে বন্ধুর হাতে নিহত মুমিনের দাফন সম্পন্ন
- কানাইঘাটে বন্ধু কেড়ে নিল বন্ধুর প্রাণ
- শাহজালাল উপশহরে দারুল আজহার মডেল মাদরাসার বিজ্ঞান মেলা অনুষ্টিত
- লিবিয়ায় নিখোজ ফারহানের সন্ধান চেয়ে কানাইঘাট প্রেসক্লাবে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
- জৈন্তিয়াবাসীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় “বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ” গঠিত
» সিলেটে টিলাধস ট্রাজেডি : বাবা-মা-সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যু
প্রকাশিত: ১০. জুন. ২০২৪ | সোমবার
চেম্বার প্রতিবেদক: সিলেট যেন এখন দুর্যোগের অঞ্চল। একের পর এক দুর্যোগে বিপর্যস্ত মানুষ। একটি আঘাতের রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি আঘাত। একটির ক্ষত সারতে না সারতে আরেকটি ক্ষতের সৃষ্টি। ভারী বৃষ্টি, ভয়ঙ্কর ভারতীয় ঢল, ভয়াবহ বন্যা, গ্রাম ছাপিয়ে নগর ডুবে যাওয়া এবং এরসাথে টিলা ধস।এমনই একটি টিলা ধসের ট্রাজেটি গতকাল ঘটে গেলো সিলেটে। নগরের চামেলীবাগ এলাকায় টিলা ধসে মাটির সাথে মিশে গেলো একটি পরিবার। চাপা পড়া স্বামী, স্ত্রী ও শিশু সন্তানের লাশ প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হলো। সোমবার সকাল ৮টার দিক থেকে উদ্ধার কাজ শুরু হয়, বেলা দেড়টার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এই তিনজন হলেন চামেলীবাগ এলাকার আগা করিম উদ্দিন (৩৪), তাঁর স্ত্রী শাম্মী আক্তার (২৬) ও তাদের দুই বছরের ছেলে তানিম।অনেকে বলছেন, রাতের আঁধারে সিলেটের পাহাড়টিলা কেটে বসতি আর মাটি বাণিজ্যের খেসারত ‘চামেলীবাগ ট্রাজেডি’! টিলার মাটিচাপায় থেমে গেল একটি পরিবারের স্বপ্ন। স্তব্ধ হয়ে গেল একটি ফুটফুটে সুন্দর শিশুর হাঁসি! মাটির সাথে মিশে গেল একটি সংসার।
স্থানীয়রা জানালেন, নগরীর চামেলীবাগ আবাসিক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে মানুষ। সোমবার ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে ওই এলাকার একটি টিলা ধসে পাদদেশে থাকা দুটি পরিবারের ঘরে ওপর পড়ে।
এ সময় টিলার পাশের টিনশেডের একটি বাসায় মাটিচাপা পড়েন এক পরিবারের ৭ জন সদস্য। তাদের মধ্যে চারজনকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করা গেলেও ওই পরিবারের এক দম্পতি ও তাঁদের দুই বছরের শিশু মাটিচাপা পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সিটি করপোরেশনের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।
টিলাধসের খবর পেয়ে মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মাটিচাপা পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে উদ্ধারকাজের সঙ্গে যুক্ত হয় সেনাবাহিনী।
লাশ উদ্ধারে পর বেলা আড়াইটার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেন সেনাবাহিনীর সিলেট ক্যান্টনমেন্টের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফারুক আহমেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সেনাপ্রধানের নির্দেশে সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে আমাদের ৩টি টিম উদ্ধারকাজ শুরু করে এবং একপর্যায়ে ৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আমাদের মেডিকেল টিমের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া চামেলিবাগ এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ঘটনার সময় সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। চাপাপড়া আধাপাকা ঘরটি ছিল টিলার নিচে। অনেক বৃষ্টিপাতের কারণে টিলার বিশাল একটি অংশ ধসে ঘরটির ওপর পড়লে করিম, তার স্ত্রী ও শিশুসন্তান মাটিচাপা পড়ে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাদের সন্ধান আমরা পাইনি। পরে সেনাবাহিনী তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন-মাহমুদ উদ্দিন, বাবুল উদ্দিন, আগা বাচ্চু উদ্দিন, শফিক উদ্দিন।
সিলেট শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য বলেন, মাটি চাপা পড়া তিনজনকে উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল। তিনজনের লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি দল উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন। সিসিকের ৩৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, টিলা ধসে মাটিচাপা পড়ে যাওয়া একই পরিবারের তিন জনের সন্ধানে ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করে সেনাবাহিনীর একটি দল। একপর্যায়ে মাটিচাপা পড়া করিমসহ তার স্ত্রী ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক।
এদিকে, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, টিলা ধসে পাদদেশে যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে তাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই সময়ে টিলার নিচে বা ওপরে কাউকে না থাকার অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, অপরিকল্পিতভাবে টিলা কাটার কারণে ধসের ঘটনা ঘটছে। তাই টিলা কাটা এবং টিলার আশেপাশে থাকা থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো। বিষয়টি নিয়ে নগর ভবনে জরুরি সভার আহ্বান করেছি এবং জনসচেনতা বাড়াতে ঝঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং করবে সিলেট সিটি করপোরেশন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের তথ্যমতে, গত তিনদিন ধরে সিলেটে কখনো হালকা কখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। গত ৮ জুন রোববার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। সোমবার ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে সিলেট নগরের অনেক এলাকা প্রায় ডুবে যায়।
এসময় নগরের উপকণ্ঠে টিলা ধসের শঙ্কা তৈরি হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তার কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
বেলা সূত্র জানায়, সিলেট মহানগর ও সিলেট সদর উপজেলায় ২শ টিলা রয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় আরও দুইশর উপরে টিলা আছে। এসব টিলার মধ্যে অনেক টিলাই সম্পূর্ণ এবং অধিকাংশ টিলা অর্ধেক ও আংশিকভাবে কেটে ফেলা হয়েছে। টিলা কেটে ফেলার কারণে ও কাটা অব্যাহত থাকায় দিনদিন ঝুঁকি বাড়ছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০২ সালে শাহী ঈদগাহ এলাকায় ৪ জন, ২০০৫ সালে গোলাপগঞ্জে টিলা ধসে একই পরিবারের ৩ জন, ২০০৯ সালে মৌলভীবাজারে জেরিন চা বাগানে পাহাড় ধসে ৩ জন, একই বছরের ১০ অক্টোবর গোলাপগঞ্জের কানিশাইলে মাটি চাপায় ১ শ্রমিক মারা যান। ২০১৪ সালে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দেয়াল ধসে একই পরিবারের ৩ শিশুর মৃত্যু হয়। আর জৈন্তাপুরে পাহাড় ধসে মারা যান আরো ২ শিশু।
সর্বশেষ খবর
- কানাইঘাটে ‘প্রভাতী সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ’র ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
- কানাইঘাটে ফের হত্যাকান্ড || দোকান থেকে আইসক্রিম বিক্রেতার লাশ উদ্ধার
- বৃহত্তর জৈন্তিয়া কল্যাণ পরিষদের আহবায়ক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত
- ইকরা ট্রাভেলস-সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
- ২৩ নভেম্বর সিলেটে জমিয়তের গণসমাবেশ সফল করুন: সিলেট জমিয়ত
সর্বাধিক পঠিত খবর
- কানাইঘাটে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত, গ্রেফতার-১
- ফের বাংলাদেশ থেকে ব্রিটিশ ভিসা দেওয়া শুরু, রয়েছে নানা শর্ত
- আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি মাহফুজের, ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম
- কানাইঘাটে পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় যুবককে কুপিয়ে আহত,থানায় অভিযোগ দায়ের
- কানাইঘাটে ৫০ উর্ধ্ব মহিলার যৌন হেনেস্থার ভিডিও যে ভাবে ধারণ করে বখাটেরা