ভয়াবহ বন্যার কবলে জৈন্তা-গোয়াইনঘাট-কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘুর্ণিঝড় রেমালের তা-ব শেষ হতে না হতেই সিলেটে বন্যার দুর্যোগ শুরু হয়েছে। নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে অত্যতন্ত দ্রুত গতিতে। ইতিমধ্যে সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের অন্তত পাঁচটি নদী পাঁচটি পয়েন্টে বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য পয়েন্টগুলোতেও বিপৎসীমার কাছাকাছি পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে গোয়াইনঘাট কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার একটি বড় অংশে বন্যার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। অবশ্য বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রও।

গত দুই দিনধরে সিলেটে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কখনো থেমে থেমে আবার কখনোবা টানা বৃষ্টিপাতে জনজীবনে দুর্ভোগ নামার পাশাপাশি সিলেটের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে হু হু করে।

মঙ্গলবারের মতো বুধবারও সিলেটের নদ-নদীগুলোতে পানি বেড়েছে রীতিমতো অস্বাভাবিকভাবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় এ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এসময় সুরমার পানির উচ্চতা ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার।

সুরমার সিলেট পয়েন্টে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ৮ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। বুধবার একই সময়ে তা বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও প্রায় ছুঁয়ে গেছে। এসময়ে সুরমার পানি সিলেট পয়েন্টে বইছিল ১০ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০।

এদিকে আমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০। আর আজ বুধবার পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৬০। মানে আমলসীদে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

শেওলা ফেঞ্চুগঞ্জ এবং শেরপুরে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি এ তিন পয়েন্টেও বাড়ছে হু হু করে। শেওলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় উচ্চতা দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৬১ সেন্টিমিটার। ফেঞ্চুগঞ্জে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ০০, বুধবার একই সময়ে পানির উচ্চতা দাঁড়ায় ৮ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। আর শেরপুরে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ৪ দশমিক ৬০, বুধবার একই সময়ে পানির উচ্চতা দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। এ তিন পয়েন্টের বিপৎসীমা হচ্ছে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ০৫, ৯ দশমিক ৪৫ ও ৮ দশমিক ৫৫।

এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে ইতিমধ্যে বন্যায় ভাসতে শুরু করেছ গোয়াইনঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এ উপজেলায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোট ৫৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রের কোনো কোনোটিতে আক্রান্তরা উঠতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম। কানাইঘাট এবং জৈন্তাপুরের নিম্নাঞ্চল পানিতে ভাসতে শুরু করেছে।

এসব উপজেলায় প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।