সর্বশেষ

» মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে কানাইঘাটের এক ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ১৮. ডিসেম্বর. ২০২৩ | সোমবার

কানাইঘাট প্রতিনিধি: ওমান প্রবাসীকে গ্রীসে পাঠানোর নাম করে ইরানে আটক রেখে নির্যাতন করে ও হত্যার ভয় দেখিয়ে প্রবাসীর পরিবারের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় কানাইঘাট প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির মৃত ফয়েজ উল্লাহর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২ বছর পূর্বে তার আপন ভাতিজা আকিল আহমদ জীবন-জীবিকার তাগিদে ওমানে যায়। ওমান অবস্থানকালে জৈন্তাপুর উপজেলার ছাতারখাই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য তজম্মুল আলীর পুত্র ইরান প্রবাসী সায়েম আহমদের সাথে বছর খানেক পূর্বে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তার। পরিচয়ের সূত্র ধরে সায়েম আহমদ ওমান প্রবাসী আকিলকে ইরান থেকে ভিসা দিয়ে ইউরোপের দেশ গ্রীসে পাঠানোর কথা বলে। এ বিষয়টি আকিল আমাকে জানালে গত মার্চ মাসে ইরান প্রবাসী সায়েম আহমদের সাথে মোবাইল ফোনে আমি কয়েকবার কথা বলি এবং সে ৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভিসা দিয়ে আকিলকে গ্রীসে পাঠাবে বলে জানায়। সায়েম আরো বলে সে অনেক প্রবাসীকে ইরান থেকে গ্রীসে পাঠিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে রিয়াজুল ইসলাম আরো বলেন, কথাবার্তা চূড়ান্ত হওয়ার পর গত ২৪ মার্চ ইরান প্রবাসী সায়েম আহমদের কথামতো তারই গ্রামের চতুল বাজারের ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অনেকের উপস্থিতে তার মা পিয়ারা বেগমের কাছে ৮০ হাজার টাকা প্রদান করি। এরপর আরো ৪ কিস্তিতে পিয়ারা বেগম ও তার ছেলে জবরুল আহমদের কাছে নগদ আরো ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করি। সায়েম আহমদ আমার ভাতিজাকে গ্রীসে পাঠানোর নাম করে ২৫ মার্চ ওমান থেকে ইরানে তার কাছে রাখে। এরপর আর্ন্তজাতিক মানবপাচারকারী চক্রের দালাল সায়েম আহমদ ও সহযোগীরা আকিলকে ইরানে টর্চার সেলে বন্দী রেখে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে এবং মুক্তিপণ দাবি করে। দেড় লক্ষ টাকা মুক্তিপণ না দিলে আকিলকে হত্যা করে ইরানের সমুদ্রে ফেলে দিবে বলে হুমকি দেয় সায়েম আহমদ।

তিনি বলেন, আকিলকে বাঁচাতে সায়েম আহমদের কথামতো তার মা ও ভাইয়ের কাছে দাবীকৃত দেড় লক্ষ টাকা প্রদান করলে ইরানের টর্চার সেল থেকে আকিলকে ছেড়ে দিলে সে সিলেটের ছাতক উপজেলার এক ইরান প্রবাসীর কাছে আশ্রয় নেয়। পরে আকিল আহমদ গত ১৮ অক্টোবর ইরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস তেহরানে মানবপাচারকারী চক্রের দলনেতা সায়েম আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।

তিনি আরও বলেন, গ্রীসে পাঠানোর নামে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধারের জন্য সায়েম আহমদের পরিবারের কাছে বিচার প্রার্থী হয়েও টাকা ফেরত পাইনি। মানবপাচারকারী চক্রের দলনেতা সায়েম আহমদ ও তার সহযোগী এবং প্রতারণার মাধ্যমে গ্রীসে পাঠানোর নাম করে তার মা এবং ভাই কর্তৃক টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আমি বাদী হয়ে সিলেটের আদালতে দরখাস্ত মামলা দায়ের করি, যা বর্তমানে কানাইঘাট থানায় তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে।

মামলা দায়ের এবং ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসে অভিযোগ করার কারণে ক্ষুব্ধ সায়েম আহমদ ও তার সহযোগীরা আকিলকে হত্যার জন্য খুঁজে বেড়াচ্ছে। এমনকি সায়েম আহমদ এক ফেসবুকপোস্টে আকিল আহমদকে ইরানে কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে নগদ ২ লক্ষ টাকা দিবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে। এমন প্রাণনাশের হুমকির কারনে আকিল আহমদ বর্তমানে ইরানের আত্মগোপনে রয়েছে, তার কোন সঠিক সন্ধানও আমরা পাচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনে ইরানে অবস্থানরত ভাতিজা আকিল আহমদের জীবন রক্ষা সহ আর্ন্তজাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য সায়েম আহমদ, তার সহযোগী ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সিলেটের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেছেন রিয়াজুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামিল আহমদ, রিয়াজুল ইসলামের গ্রামের বাসিন্দা শাহাব উদ্দিন, শাহিন আহমদ, বদরুল ইসলাম।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

April 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930