কানাইঘাটে নির্মাণাধীন ভবন দখল করতে না পেরে মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ
তাওহীদুল ইসলাম: নির্মাণাধীন ভবন দখল করতে না পেরে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে কানাইঘাট রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিলাল আহমেদ এর বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্নভাবে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এই রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতা বিলাল আহমেদ ১৪৫ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে থানা পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে ভবন দখলের চেষ্টা করতেছেন। বিলাল আহমেদ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের লালারচক গ্রামের সৌদি প্রবাসী আব্দুল কুদ্দুছ ১৯৯০ সালে রাজাগঞ্জ বাজারে ৪ ডিসিমেল জায়গা ক্রয় করেন। রাজাগঞ্জ বাজার মৌজার বিএস ৪৭ নং খতিয়ানের ২৭১২ নং দাগের ৪ শতাংশ।
২০১৯ সালের ৬ মার্চ এ জায়গার উপর একটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু করেন আব্দুল কুদ্দুছ। বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু করার পর বিল্ডিং এর উপর নজর পড়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ সভাপতি বিলালের। তিনি এ জায়গা দখলের ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তিনি আব্দুল কুদ্দুছকে বিল্ডিং নির্মাণ বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু কুদ্দুছ বিলালের কথায় কান না দিয়ে কাজ চালিয়ে যান। একদিন বিলাল তার দলের কয়েকজন কর্মী নিয়ে এসে কাজ বন্ধ করার চাপ দেন। তখন এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে বিলাল তার কর্মী বাহিনী নিয়ে পালিয়ে যান। তখন আব্দুল কুদ্দুছ এলাকার সচেতন লোকদের বিষয়টি অবগত করেন।
এরই মধ্যে একদিন রাজাগঞ্জ বাজারে কুদ্দুছকে পেয়ে কিভাবে বিল্ডিং এর কাজ করেন তা দেখে নেবেন বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন বিলাল।
এদিকে গতকাল ২৮ মার্চ বিলাল আহমেদ কানাইঘাট থানায় আব্দুল কুদ্দুছ গংদের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আব্দুল কুদ্দুছ গংরা জোরপূর্বকভাবে বিলাল আহমেদের জমিতে ভবন নির্মাণের কাজ করছেন।
মামলায় পিতা-পুত্রসহ ৩ জনকে আসামী করা হয়েছে৷ আসামীরা হলেন আব্দুল কুদ্দুছ, তার ২ পুত্র জুনেদ আহমদ ও মাহফুজ আহমদ। এ বিষয়ে আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, বিলাল ও তার সংঘবদ্ধ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে আমাদেরকে হয়রানি করে আসতেছে। তাদের কাজই হলো মূলত প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অন্যদেরকে প্রভাবিত করে বিভিন্নভাবে অর্থ,জায়গা হাতিয়ে নেওয়া। তিনি প্রশাসনের কাছে দাবী করে বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে এই প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক আমাদের নির্মাণ কাজ চালানোর সুযোগ করে দিলে খুবই উপকৃত হবো।
এই ব্যাপারে জানতে রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিলাল আহমেদের সাথে বারবার ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি জায়গাটি প্রবাসী আব্দুল কুদ্দুছের। তিনি ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। এখন যখন মামলা হয়েছে মাননীয় আদালত বিষয়টি সমাধান করবেন।
কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, কোন দাগের জমি কার, কোথায় সেটা নির্ধারণের দায়িত্ব তো আমাদের না, আদালতের। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।