আজ উদ্বোধন হচ্ছে ১৬৪ সেতু ও ওভারপাস
চেম্বার ডেস্ক:: সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্মিত ১৫০টি সেতু ও বিভিন্ন মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস আজ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠানে সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে হাজির হবেন। এরপর তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন ও বৃক্ষরোপণ করবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে ময়মনসিংহ জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের উপর কেওয়াটখালি সেতু ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিএর স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র, বিআরটিসির বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবেন তিনি।
চালু হতে যাওয়া ১৫০টি সেতু ও বিভিন্ন মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা তৈরি করবে বলে মনে করছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সেতুগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জিডিপি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
অন্যদিকে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর বলছে, সেতুগুলো ও ওভারপাস প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও সময় সাশ্রয়ী করবে।
১৫০টি সেতু ও বিভিন্ন মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধন প্রসঙ্গে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, যোগাযোগের যে মেগা প্রকল্পগুলো আছে, সেগুলোর সুযোগ সুবিধা কিন্তু আমরা এরই মধ্যে পাওয়া শুরু করেছি। ১৫০টি সেতুর মধ্যে কিছু সেতু নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে এবং কিছু সেতু নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। এই সেতুগুলো আমাদের সীমান্তবর্তী এবং প্রান্তিক যে জনগোষ্ঠী আছে, তাদের যাতায়াতের বড় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এটাকে আমি অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে দেখি। এতে করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবে।
উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে রয়েছে— ১৫০টি সেতু ও বিভিন্ন মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস; ময়মনসিংহ জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের উপর কেওয়াটখালি সেতু ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন; ডিটিসিএ ভবন; বিআরটিএ’র স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র, বিআরটিসি’র ময়মনসিংহ বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শুভ উদ্বোধন।
সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৮টি বিভাগে মোট ৩৯টি জেলায় এ সকল সেতু ও ওভারপাসের অবস্থান। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে রয়েছে ৪০টি সেতু, ঢাকা বিভাগে ৩২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭টি ও রাজশাহী বিভাগে ২২টি সেতু। এছাড়াও খুলনা বিভাগে রয়েছে ১২টি সেতু, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে রয়েছে ৮টি করে সেতু এবং সিলেট বিভাগে উদ্বোধন হচ্ছে একটি সেতু। এ ১৫০টি সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯.৪৫ কিলোমিটার। উত্তরবঙ্গের যানজট নিরসনে ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়কসহ (এন-৫) বেশ কয়েকটি মহাসড়কে নির্মিত ১৪টি ওভারপাসের মধ্যে ৮টি অবস্থিত রাজশাহী বিভাগে আর ৬টির অবস্থান রংপুর বিভাগে। এ ১৪টি ওভারপাসের মোট দৈর্ঘ্য ৬৮৯ মিটার।
এ সকল সেতু ও ওভারপাসগুলো দেশের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৫৫৮.২১ মিটার দীর্ঘ তিতাস সেতু, ৪০২.৬১ মিটার দৈর্ঘ্যের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক সুরমা সেতু, বগুড়ার ২৯৮.৮০ মিটার দীর্ঘ আড়িয়ারঘাট সেতু, ১৯৩.৩০ মিটার দীর্ঘ ঢাকা জেলার নয়ারহাট সেতু উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অদম্য অগ্রযাত্রার পরিচায়ক।
দেশজুড়ে বিভিন্ন মহাসড়কে অবস্থিত জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলি সেতুগুলো প্রতিস্থাপন করে নির্মিত আরসিসি সেতুগুলোর মধ্যে মোট ১৫টি সেতু উদ্বোধন হচ্ছে। যা জাতীয় মহাসড়কগুলোকে করবে আরও গতিশীল, নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। এসব সেতুর মধ্যে গাজীপুরের ১৮৭.১৮ মিটার দীর্ঘ চাপাইর সেতু ও নারায়ণগঞ্জের ১৪৯.৮৭ মিটার দৈর্ঘ্যের রামচন্দ্রী সেতু উল্লেখযোগ্য।