কানাইঘাটে দোকানের ভাড়া চাইতে গিয়ে হার্ট এ্যাটার্কে মারা গেলেন স্বাস্থ্যকর্মী ও বিএনপি নেতা ফারুক
কানাইঘাট প্রতিনিধি: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ী বাজারে পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্টানের দোকান ভাড়া চাইতে গিয়ে আপন ছোট ভাইয়ের রূঢ় আচরণে বড় ভাই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী ও বিএনপি নেতা ফারুক আহমদ। গতকাল দুপুরে উপজেলার গাছবাড়ী বাজারে আব্দুল মুছব্বির কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাণীগ্রাম ইউপির বাসিন্দা আব্দুল মুছব্বির এর গাছবাড়ী বাজারে ”আব্দুল মুছব্বির কমপ্লেক্স” নামে একটি দো’তলা বিল্ডিং রয়েছে। এ বিল্ডিংয়ে ১০ টি দোকান রয়েছে, তার মধ্যে ৯ টি দোকান ভাড়া দেয়া আর শাপলা স্টোর নামে একটি দোকানে আব্দুল মুছব্বির ব্যবসা করতেন। আব্দুল মুছব্বির কয়েক মাস পূর্বে শারিরীক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি শাপলা স্টোর পরিচালনার দায়িত্ব দেন ছোট ছেলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা বাবুল আহমদকে। আর অন্য ৯টি দোকানের ভাড়া উত্তোলনের দায়িত্ব দেন বড় ছেলে স্বাস্থ্যকর্মী ফারুক আহমদকে।
ফারুক আহমদ পিতার কাছ থেকে দায়িত্ব পেয়ে নিয়মিত ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে দোকান ভাড়া তুলতে থাকেন। কিন্তু কয়েকমাস পর বাঁধ সাধেন ছােট ভাই বাবুল।
বাবুল বড় ভাইকে আর দোকান ভাড়া আদায় না করতে বলেন। কিন্তু ফারুক পিতার দায়িত্ব দেয়া বলে ভাড়া তুলতে থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বাবুল। তিনি স্থানীয় আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীদের দিয়ে বড় ভাইকে হুমকি দিতে থাকেন আর যেন ভাড়া আদায় না করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার( ৮ নভেম্বর) সকাল ১১ ঘটিকার দিকে যথারীতি ভাড়া তুলতে আব্দুল মুছব্বির কমপ্লেক্সে যান ফারুক আহমদ। এ সময় পূর্ব থেকে পরিকল্পিতভাবে
কমপ্লেক্সে ভাড়াটিয়া লোক রেখেছিলেন বাবুল। স্থানীয় ৭ নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মাসুদ আহমদ, ৮নং ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হক ও এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ওলিউর রহমান কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়ে ফারুক আহমদকে কমপ্লেক্সের সকল দায়দায়িত্ব বাবুলের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেন। বাবুল তখন বড় ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে কমপ্লেক্সের দায়িত্ব না ছাড়লে দেখে দেয়ার হুমকি প্রদান করেন। এ সময় ফারুক ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দোকানের মধ্যেই হার্ট এ্যাটার্ক করেন। পরে স্থানীয় লোকজন ফারুক আহমদকে উদ্ধার করে সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ফারুক আহমদকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্যকর্মী ও বিএনপি নেতা ফারুক আহমদের এমন মৃত্যুতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফারুক আহমদ মৃত্যুকালে স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
এ ঘটনায় ফারুক আহমদের পরিবার থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।