সর্বশেষ

» কানাইঘাটে বিয়ের ১ দিন আগে ডিভোর্সি নারীর আত্মহত্যা,প্ররোচনার দায়ে যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ২৯. জুলাই. ২০২১ | বৃহস্পতিবার

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাটে আড়াই বছরের শিশুকে রেখে,২য় বিয়ের ১ দিন পূর্বে রোজিনা বেগম নামে এক ডিভোর্সি নারী আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল (২৮ জুলাই) সকালে কানাইঘাট উপজেলার ৮নং ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়নের হরিশিংমাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রোজিনা বেগম হরিশিংমাটি গ্রামের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুর রহমানের মেয়ে।

জানা যায়,রোজিনা বেগম ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি আহমদ আলীর ছেলে,উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা হারুন রশিদের সাবেক স্ত্রী। আড়াই বছর বয়সী তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারী মাসে হারুন রশিদের সাথে রোজিনার ছাড়াছাড়ি (ডিভোর্স) হয়। এর পর থেকে শিশু সন্তানকে সাথে নিয়ে রোজিনা তার বাবার বাড়ী বসবাস করছিলেন। আজ ঝিংঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নাঈম উদ্দিনের সাথে তার ২য় বিবাহ হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তিনি অন্যান্য দিনের মত একা কক্ষে ঘুমাতে যান। বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠছেন না দেখে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ডুকে সিলিং ফ্যানের সাথে তার দেহ ঝুলতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষে আজ বিকেলে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে নিহত নারীর বাবা শহীদুর রহমান আজ কানাইঘাট থানায় আব্দুস সামাদ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সে একই ইউনিয়নের ভাড়ারি মাটি গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে।

মামলার এজাহারে শহীদুর রহমান উল্লেখ করেছেন, ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল ভাড়ারি মাটি গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে হারুন রশিদের সাথে রোজিনা বেগমের বিবাহ হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই রোজিনার সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে হারুন রশিদের চাচাত ভাই আব্দুস সামাদ। বারবার নিষেধ করার পরও সামাদ রোজিনার পিছু ছাড়েনি। এ নিয়ে হারুন রশিদ ও রোজিনার পরিবারে দ্বন্দ লেগেই থাকত। এই দ্বন্দের জেরে গত ফেব্রুয়ারী মাসে হারুন রশিদের সাথে রোজিনার ডিভোর্স হয়। পুত্র সন্তানকে নিয়ে রোজিনা বাবার বাড়িতেই ছিল।

শহীদুর রহমান আরো উল্লেখ করেন,রোজিনাকে আবারও বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র ঠিক করা হয়েছিল। ২৯ জুলাই ঝিংঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নাঈম উদ্দিনের সাথে তার বিবাহ হওয়ার কথা ছিল। আব্দুস সামাদ এই বিবাহে বাঁধ সাজে এবং রোজিনাকে বিয়েতে রাজি না হওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। আব্দুস সামাদের প্ররোচনায় রোজিনা বেগম ২৮ জুলাই আত্মহত্যা করে। এটি আত্বহত্যা নয়,এটি পরিকল্পিত হত্যা। আব্দুস সামাদ আমার মেয়েকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। সে এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না। তাই,আমি তাকে আসামী করে মামলা দায়ের করছি।

মামলা গ্রহণের কথা স্বীকার করে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম পিপিএম বলেন,’নিহত রোজিনা বেগমের বাবা আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন। বিধি অনুযায়ী পুলিশ তার আবেদন মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং আসামী আব্দুস সামাদকে ধরতে অভিযান শুরু করেছে। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।’

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031