আল-আমীন জামেয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
চেম্বার ডেস্ক::
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড.ইকবাল আহমদ সিদ্দিকী বলেছেন, বাংলা ভাষাকে সর্বক্ষেত্রে সমুন্নত রাখতে হবে। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, মাতৃভাষার গুরুত্ব সব জায়গায় আছে।তিনি বলেন, আমরা অনেক সময় আঞ্চলিক ভাষাকে গুরুত্ব দেই না। আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগি। তা ঠিক নয়। এই যে সিলেটী ভাষা এ জনপদের মানুষের মায়ের ভাষা। তাই মাতৃভাষা, আঞ্চলিক ভাষা কে অবহেলা করা উচিত নয়। তিনি মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার সর্বক্ষেত্রে প্রচলনের দাবী জানান। তিনি বলেন, ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা। কিন্তু এটি শেখা সহজ। ছয় মাসেই শিখা যায়। বাংলা শিখতে গেলে দু তিন বছর লেগে যাবে। চীনা ভাষা তো শিখতে আরো বেশী সময় লাগে। তিনি বলেন, ভালোভাবে জ্ঞানার্জন করতে মাতৃভাষার কোন বিকল্প নেই।
ইকবাল আহমদ সিদ্দিকী গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর আল-আমীন জামেয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভা ও স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট এম সি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল আহাদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক আলোকিত সিলেটের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক গোলজার আহমদ হেলাল।অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শামীম আহমদ, অভিভাবক খায়রুল ইসলাম, সমাজ সেবক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, প্রাইমারী শাখা ইনচার্জ শাহ মাহমুদুল হক, ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল জলিল প্রমুখ।
বিশেষ অতিথি প্রফেসর আব্দুল আহাদ বলেন, মাতৃভাষার লড়াইয়ে ইসলামপন্থীদের ভূমিকা ছিল অনন্য। এটি একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন।তিনি ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জানতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি সাংবাদিক গোলজার আহমদ হেলাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এই ক্ষণে ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ভাষা আন্দোলনের রেশ ধরেই ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তিনি বলেন, আজ হতে ৭১ বছর পূর্বে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষায় পরিণত করার দাবীতে যে সংগ্রাম শুরু হয়েছিল, ১৯৫২ সালের সেদিনে তা ছিল হৃদয়বিদারক ও শোক। আজ তা শক্তি ও উৎসবে পরিণত হয়েছে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে একযোগে মাতৃভাষা দিবস পালন সত্যিই গৌরবের।
তিনি বলেন, শিক্ষার মূল লক্ষ্য মানুষ হওয়া।জীবিকা নির্বাহ নয়। আমরা অনেকেই ঠিকই বড় বড় ডিগ্রী অর্জন করি। কিন্তু আমরা কি মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত করতে পেরেছি? এটা ভাবনার বিষয়। তিনি বলেন, আজকের শিশুরা দেশের ভবিষ্যত কর্ণধার। এ সমাজ পরিচালনা একদিন তারাই করবে।তাদেরকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা বিশাল এক দায়িত্ব। তাই শিক্ষা মানে কাঁধে করে বেগ ঝুলিয়ে স্কুলে আসা কিংবা পরীক্ষার খাতায় কিছু লিখে দেয়ার নাম নয়। বরঞ্চ পূর্ণাঙ্গ মানুষ হওয়ার জার্নিটাই শিক্ষা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আল আমিন জামেয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থীকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সে কাজটুকুই করছে। তিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষক, গুরুজন ও পিতামাতার আদেশ নির্দেশ পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বেশী বেশী অধ্যয়ন করে ভালো মানুষ হিসেবে তোমরা নিজেদের তৈরী করতে হবে।তিনি বলেন, অমর একুশের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে।কেননা একুশ আমাদের দৃঢ়তা ও মনোবল শিখিয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকগণ,এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ, সুধীজন ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অতিথিবৃন্দ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।