সর্বশেষ

» প্রাণনাশের আশঙ্কা সমাজকর্মী কামাল উদ্দিনের || পাচ্ছেন না প্রশাসনের সহযোগিতা

প্রকাশিত: ১৬. মার্চ. ২০২২ | বুধবার

( সাক্ষাতকার)

তাওহীদুল ইসলাম:

কামাল উদ্দিন। একজন সোশ্যাল ওয়ার্কার বা সমাজকর্মী। তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কামাল উদ্দিন গাছবাড়ীর উন্নয়নের সূতিকাগার নামে পরিচিত গাছবাড়ী সমাজ কল্যাণ যুব সমিতির প্রতিষ্টাতাদের অন্যতম ও এ সংগঠনের আজীবন সদস্য। এছাড়া ঢাকনাইল সমাজ উন্নয়ন সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্টাতা।
প্রবাসেও তিনি নিজ উপজেলা কানাইঘাটের বিভিন্ন উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন অগ্রভাগে থেকে। তিনি সমাজের অসহায়,হতদরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে যাচ্ছেন সাধ্যমত।
উদীয়মান এ সমাজসেবী তাকে হত্যার জন্য নীল নকশা চলছে বলে জানিয়েছেন।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী ও প্রশাসনের লোকেরা আমাকে সুস্থভাবে থাকতে দিচ্ছে না। তারা আমাকে একের পর এক প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে, আমার উপর আক্রমণ করছে।
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই, তারা মনে করে, এদেশে তাদের লোক ছাড়া আর কেউ নির্বাচন করতে পারবে না।
কারা হুমকি দিচ্ছে বা কি কারণে হুমকি দিচ্ছে জানতে চাইলে কামাল বলেন, সদ্য শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনে আমার চাচাতো ভাই, এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী মাস্টার আবু বকর ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয় অর্জন করেন। এ নির্বাচনে আমি আমার চাচাতো ভাই মাস্টার আবু বকরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাই, জনগণের দোয়ারে দোয়ারে গিয়ে আমার প্রার্থীর পক্ষে ভােট চাই। নির্বাচনে সরকার দল আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা সায়েম আহমদ।
আমি ২৩ ডিসেম্বর গাছবাড়ী বাজারে এক নির্বাচনী জনসভায় বর্তমান সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি, দু:শাসন ও ভোট চোর সরকারের বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরে বক্তব্য রাখি। জনসভায় আমাদের প্রার্থী সৎ,যোগ্য গরিব দুখী মেহনতি মানুষের বন্ধু মাস্টার আবু বকরকে আনারস প্রতীকে জনগণকে মূল্যবান ভোট প্রদান ও নৌকার প্রার্থীকে ব্যালটের মাধ্যমে প্রত্যাখান করার আহ্বান জানাই।
ঐ দিন জনসভা শেষ করে আমি বাড়ীতে ফেরার পথে স্থানীয় জংলায় আওয়ামীলীগের ১০/১২ জনের একটি ক্যাডার বাহিনী আমার গতিরোধ করে ঘিরে ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও আমার উপর আক্রমনের চেষ্টা চালায়। এসময় আমার সাথে থাকা লোকজন ও স্থানীয় জনগণ আমার জীবন রক্ষা করেন।
এ ঘটনায় আমি কানাইঘাট থানা পুলিশকে অভিযোগ দিতে গেলে তারা আমার অভিযোগ গ্রহণ করেনি।
কামাল উদ্দিন আরও বলেন, এ ঘটনার পর আমি আমার প্রার্থীর পক্ষে আরো জোড়ালো প্রচারণা চালাই, শেষমেশ ৫ জানুয়ারী অনুষ্টিত নির্বাচনে সরকার দলের নৌকার প্রার্থী সায়েম আহমদকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে আমরা আনারস প্রতীকে বিজয় অর্জন করি।

বিজয় অর্জনের পর ১৫ ফেব্রুয়ারী আমার চাচাতো ভাইয়ের বিজয় উদযাপন করার জন্য এক সমাবেশের আয়োজন করি, সেখানেও আমি সরকার দলের প্রার্থীকে পরাজিত করার জন্য জনগণকে ধন্যবাদ জানাই ও ফ্যাসিবাদী এ সরকারকে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।
কিন্তু দুংখজনক ঐদিনও জনসভা শেষ করার পর আমার মোবাইলে বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়। কেউ কেউ আমার জন্য কাপনের কাপড় রেডি বলে হুশিয়ারী করেন।
এসব ফোনকল পেয়ে আমি ভীত স্বন্তস্ত্র হয়ে পড়ি।আমার জীবনের হুমকির বিষয়টি কানাইঘাট থানায় জিডি করতে চাইলে থানা পুলিশ জিডি নেয়নি।
কামাল নিজের উপর নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে আরও বলেন, ফোনের এ ঘটনার পর ১০ মার্চ আমাদের এলাকার কুখ্যাত গডফাদার আওয়ামীলীগ নেতা অলিউর রহমান ৫ জন ক্যাডার নিয়ে আমার বাড়ীতে আসেন ও আমাকে বলেন, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে আমি ৫০ হাজার টাকা দেয়ার জন্য। এতো টাকা আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব নয় জানালে গুন্ডারা আমার পরিবার তুলে গালাগালি করে ও বিভিন্ন অপমানজনক কথাবার্তা বলে।
তারা আমাকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আগে টাকা প্রস্তুত রাখতে বলে না হয় আমাকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে চলে যায়।
কামাল সাক্ষাতকারে বলেন, এভাবে একের পর এক হুমকি, হামলা,নির্যাতনের কারণে আমার স্বাভাবিক জীবনে নেমে এসেছে অমানিশার ঘোর অন্ধকার।
আমি প্রতিনিয়ত নিজের জীবন নিয়ে শংকিত। এভাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরাধীন হয়ে কিভাবে থাকা যায়, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, যে কোন সময় তারা আমাকে হত্যা করতে পারে। আমি আমার জীবন নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30