হ্যামট্রামেক সিটির কাউন্সিলম্যানের দায়িত্বে সিলেটের মুহিত
সুলায়মান আল মাহমুদ, মিশিগান থেকে : বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুহিত মাহমুদ সিলেটের সন্তান। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের হ্যামট্রামেক সিটির নবনির্বাচিত কাউন্সিলম্যান। সম্প্রতি কাউন্সিলম্যান অ্যাডাম আলবামাকির পদত্যাগ করলে তার জায়গায় নতুন দায়িত পেয়েছেন সিটি নির্বাচনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহিত মাহমুদ। তিনি গতকাল মঙ্গলবার শপথের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শাসনভার গ্রহণ করেন।
হ্যামট্রামেক সিটির প্রাইমারিতে জয়ী হওয়া মুহিত মাহমুদ ২০২১ সালের সিটির সর্বশেষ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে মাত্র ৪৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। পেশাগত কারণে পরিবারসহ অন্য শহরে স্থানান্তরের কারণেই পদত্যাগ করেন অ্যাডাম আলবামাকি। নতুন কাউন্সিলম্যান মুহিত মাহমুদকে মেধাবি, যোগ্য ও আস্থাশীল আখ্যা দিয়ে অ্যাডাম আলবামাকি পদত্যাগপত্রে বলেন, ‘আমি যে ভূমিকার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলাম তা পালনে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে পেশাগত ক্যারিয়ারের জন্য আমি ও আমার পরিবার অন্য শহরে স্থানান্তর হতে হচ্ছে। যেহেতু অন্যজায়গায় চলে যাচ্ছি তাই আনুষ্ঠানিকভাবে হ্যামট্রামিক সিটি কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করছি’।
মুহিত মাহমুদ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার পরিবর্তে এমন একজন জায়গা করে নিচ্ছেন, যাকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি এবং তিনি মেধাবি ও যোগ্য। চলার পথে মুহিত মাহমুদকে দেখেছি, হ্যামট্রামিকের জনগণকে সেবা করার জন্য তার সক্ষম ও আস্থাশীল।
জানা গেছে, হ্যামট্রামেক সিটিতে ইতোমধ্যে দীর্ঘদিন থেকে কাউন্সিলম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কামরুল হাসান ও নাঈম চৌধুরী। এদিকে হ্যামট্রামেক সিটির কাউন্সিলে আরেক বাংলাদেশি স্থান করে নেয়ায় স্থানীয় কমিউনিটির মধ্যে আনন্দ-উল্লাস বিরাজ করছে। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ তথা সিলেটের একজনের এমন গৌরবময় বিজয়কে ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এদিকে নতুন কাউন্সিলম্যান মুহিত মাহমুদ কমিউনিটির পাশে ভবিষ্যতে আরও দৃঢ়ভাবে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সিটিতে স্থান পাওয়ার পেছনে আমাদের বাংলাদেশিদের অবদান আছে। আমি চেষ্টা করবো কমিউনিটির জন্য কাজ করার।
সিলেটের গোলাপগঞ্জের কৃতি সন্তান মুহিত মাহমুদ ১৯৯৬ সালে আমেরিকায় আসেন। ২০০১ সাল থেকে মিশিগানে সপরিবারে বসবাস করছেন। তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী সম্পন্ন করেন ও ডেট্রয়েট সিটির ওয়েইন কাউন্টি কমিউনিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। মুহিত মাহমুদ পেশায় একজন সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রিয়াল। পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশী-আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ককাসের প্রেসিডেন্ট, ১৪ কংগ্রেসনাল ডেমোক্রেটিক কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও লোকাল ২৪-এর ইউনিয়ন লিডার ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ হ্যামটামেক সিটিতে কাউন্সিলম্যান হিসেবে একাধিক বাংলাদেশীর দায়িত্ব পালন বর্হিবিশ্বে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশীরা বিদেশের মাটিতে তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে ঐক্যবদ্ধ থাকলে ভালো কিছু করা যায় হ্যামট্রামেক সিটি তার উজ্জল দৃষ্টান্ত।