সেমিফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা
ডেস্ক রিপোর্ট : ৮০ তম মিনিট পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা।প্রথমে একটি গোল করানোর পর নিজে গোল করে আলবিসেলেস্তেদের সেমিফাইনালে প্রায় তুলে ফেলেছিলেন দলটির সবচেয়ে বড় তারকার লিওনেল মেসি।তবে ম্যাচের শেষদিকে এসে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ায় নেদারল্যান্ডস। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তারা দুটি গোল শোধ করে সমতা এনে খেলা নিয়ে যায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়েও আর্জেন্টিনার একের পর এক লাগাতার আক্রমণ ঠেকিয়ে ম্যাচের ভাগ্য টাইব্রেকারে পর্যন্ত নিয়ে যায় ভেন গলের শিষ্যরা। শেষ রক্ষা হয়নি।টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক মার্টিনেজের দারুণ দক্ষতা আর মেসি-লাউতারো মার্টিনেজদের ঠাণ্ডা মাথায় লক্ষভেদের ৫-৪ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে উঠে গেছে স্কেলোনির শিষ্যরা।
কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে এদিন ম্যাচের শুরুটা দুই দলই করেছিল কিছুটা সর্তকতার সাথে।বল পজিশনে এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের প্রথম আধঘন্টা বলার মতো কোন সুযোগ তৈরী করতে পারেনি আর্জেন্টিনা।এরপরই দেখা মেলে মেসি জাদুর।৩৫ তম মিনিটে তার দুর্দান্ত এক বানিয়ে দেওয়া বলে ফুলব্যাক মলিনার গোল করলে লিড পায় আলবিসেলেস্তেরা।
মাঝমাঠ থেকে মেসির দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জায়গা বানিয়ে পায়ের দারুণ কারুকাজে ডি বক্সে থাকা মলিনাকে পাস দেন।নিখুঁত ফিনিশে বাকি কাজটা সারেন এই তরুণ ফুলব্যাক। বাকি সময়টাতে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হলেও কোনো গোল না হওয়ায় এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে আলবিসেলেস্তেরা।
বিরতির পরেও খেলার গতি ধরে রাখে আর্জেন্টিনা।৭৩তম মিনিটে মেসির সফল স্পট কিকে ব্যবধান দিগুণ করে আর্জেন্টিনা। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢোকার মুখে মার্কোস আকুনিয়াকে ডিফেন্ডার ডেনজেল ডামফ্রিস ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় আর্জেন্টিনা।যদিও এ সিদ্ধান্তের পক্ষে বিপক্ষে ব্যাপক বির্তক হয়েছে।সেই স্পটকিক থেকে মেসির শট ঠেকানোর কোন সুযোগ পাননি ডাচ গোলরক্ষক।
বর্তমানে বিশ্বকাপে মেসির গোল হলো ১০টি,তিনি ভাগ বসালেন আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার রেকর্ডে।
ম্যাচটা তখন পুরোপুরি আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে। তবে ৮৩ মিনিটে ভাউট বেগহোর্স্টের গোলে ডাচরা প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন দেখতে থাকে।বাঁ প্রান্ত থেকে স্টিভেন বের্গহোইসের করা নিখুঁত এক ক্রসে লাফিয়ে উঠে নেওয়া বেসিকতাসের ফরোয়ার্ডের নেওয়া হেড খুজে নেয় জাল।
এই গোলের উজ্জীবিত ডাচ দল আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে। প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকে সমতা সূচক গোলের। ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তের নাটকীয়ভাবে সেই গোলের দেখা পেয়ে যায় গলের দল।
শেষের বাশি বাজার কয়েক সেকেন্ড আগে ডি-বক্সের সীমানা ঘেষে নাথান আকেকে ফাউল করে ডাচদের ফ্রি-কিক দেন মেসি। ২২ গজ দূরের ওই ফ্রি-কিক থেকে দারূণ বিচক্ষণতার পরিচয় দেন টন কপমাইনার্স।তিনি উড়িয়ে শট না মেরে রক্ষণ দেয়ালের পাশ দিয়ে পাস দেন জটলার মধ্যে থাকা বেগহোর্স্টকে। তাঁর নিশানাভেদী শটে ম্যাচে ফেরে ডাচরা।
অতিরিক্ত সময়ে একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়ে আর্জেন্টিনা একের পর এক দারুণ সব সুযোগ তৈরি করতে থাকে।তবে কখনো ডাচ ডিফেন্ডারদের বাধায়,কখনো গোলরক্ষক কখনো গোলপোস্টের বাধায় গোলের দেখা পায়নি। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
যেখান নেদারল্যান্ডসের দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে শুরুতেই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।মেসি-লাউতারো মার্টিনেজরা সারেন আনুষ্ঠানিকতা।ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে একই মাঠে আগামী মঙ্গলবার ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা