সিলেটে ছাত্রদল-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ : থানায় মামলা
কানাইঘাট প্রতিনিধি : সিলেটের কানাইঘাটে নবীনবরণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে কানাইঘাট গাছবাড়ী আইডিয়াল কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ নিয়ে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
এদিকে এই ঘটনায় ছাত্রদলের ২১ নেতাকর্মীকে আসামী করে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার কানাইঘাট গাছবাড়ী আইডিয়াল কলেজে একাদ্বশ শ্রেণীর নবীণ শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল সমাবেশে করেছে ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। বেলা ১২টার দিকে কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে একটি নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে কানাইঘাট উপজেলা ও কলেজ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান চলাকালে ছাত্রলীগ নেতা হারুনের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র ছাত্রলীগ নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অনুষ্ঠানে হামলা চালায়। এতে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রাণের ভয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে। ছাত্রদল নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করতে চাইলেও সশস্ত্র ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সামনে ঠিকতে না পেরে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়। এসময় ছাত্রদলের ১০/১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। তারা স্থানীয় ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে ফিরে যান।
এদিকে এই ঘটনায় ছাত্রলীগের ৮/১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবী করেছেন ছাত্রলীগ নেতা হারুন মিয়া। তিনি অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নবীন বরণ অনুষ্ঠানের নামে সরকার ও ছাত্রলীগ নিয়ে উস্কানীমুলক বক্তব্য দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র করছিল। সাধারণ ছাত্ররা তাদের ক্যাম্পাস থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা হারুন বাদী হয়ে ২১ জন ছাত্রদল নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৫, তারিখ: ২/০৭/২০১৮ইং। এছাড়া মামলায় কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়।
মামলায় উল্লেখিত আসামীরা হলেন- ১। কানাইঘাট উপজেলার গণিকান্দি গ্রামের মৃত আসকির আলীর পুত্র আব্দুস সাত্তার (১৯), ২। একই উপজেলার নারাইনপুর গ্রামের মৃত মোতাহির আলীর পুত্র আব্দুল মতিন (২২), ৩। একই উপজেলার গাছবাড়ী ভাড়ারী মাটি গ্রামের নূর উদ্দিনের পুত্র শিব্বির আহমদ (১৭), ৪। নয়াগ্রামের আজির উদ্দিনের পুত্র আব্দুল মালিক (২৩), ৫। নিজাম উদ্দিনের পুত্র বদরুল (১৮), ৬। শমসের আলীর পুত্র খয়রুল (২৪), ৭। ভাড়ারী মাটির আবুল কালামের পুত্র রশিদ আহমেদ (৪৩), ৮। ইসলামপুরের হেকিম আহমদের পুত্র কয়ছর (২৫), ৯। একই গ্রামের ইকবাল হোসেনের পুত্র জাহাঙ্গীর (১৭), ১০। শাকিল আহমদের পুত্র আব্দুল মান্নান (১৯), ১১। আব্দুল হান্নানের পুত্র আব্দুল করিম (২১), ১২। লামা ঝিংগাবাড়ী মিয়াগুল গ্রামের আবু মুসা ইসলামের পুত্র নাজমুল ইসলাম (২৭), ১৩। গাছবাড়ী এলাকার আলেক উদ্দিনের ছেলে শাকিল আহমদ (১৮), ১৪। একই এলাকার রফিক উদ্দিনের সুরমান আলী (২১), ১৫। রুশন আলীর পুত্র হোসেন আহমদ (২৩), ১৬। আফতাব উদ্দিনের পুত্র আশিক উদ্দিন (২২), ১৭। আনোয়ার হোসেনের পুত্র মাসুম আহমদ (২৫), ১৮। ছত্রপুর গ্রামের শাকির উদ্দিনের পুত্র সফির উদ্দিন (২১), ১৯। একই গ্রামের নুরুল হকের পুত্র তানজিল আহমদ (২২), ২০। শামসুল হকের পুত্র নাজিরুল হক (১৯) ও ২১। সানাউল হকের পুত্র আমিরুল হক (২৫)।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল আহাদ বলেন, কানাইঘাট আইডিয়াল কলেজে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে।