৪৪ দিন যেতে না যেতেই সরে দাঁড়ালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস

চেম্বার ডেস্ক:: পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র ৪৪ দিন যেতে না যেতেই সরে দাঁড়ালেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দেওয়া ভাষণে ট্রাস বলেছেন, তিনি কনজারভেটিভ পার্টির নেতার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসকে জানিয়েছেন।

এর আগে ডেইলি মেইল জানিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রিত্ব বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা  করেছিলেন লিজ ট্রাস। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ পার্টির নীতি নির্ধারণী ১৯৯২ কমিটির প্রধানের সঙ্গে নিজের সরকারি দপ্তরে বৈঠকে বসেছিলেন ট্রাস।

কিন্তু তাকে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়তেই হলো। স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডির নেতৃত্বে ১৯২২ কমিটির সদস্যরা ট্রাসের সঙ্গে কথা বলেন।

স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডির কাছে একাধিক টোরি এমপি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের দাবি জানিয়েছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। যদিও কনজারভেটিভ পার্টির নিয়ম অনুযায়ী নতুন দায়িত্ব নেওয়া কোনো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এক বছরের মধ্যে অনাস্থা ভোট আয়োজন করা সম্ভব না। তবে প্রয়োজনে এ নিয়ম পরিবর্তন করা যায়। কিন্তু এটি আর করার প্রয়োজন হয়নি। ট্রাস নিজেই পদত্যাগ করেছেন।

১৯৯২ কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি উপপ্রধানমন্ত্রী থেরেস কোফে এবং টোরি চেয়ারম্যান জ্যাক বেরিও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যান। তারা যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছিল ‘কিছু একটা’ হবে।

এখন যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেটি হলো ট্রাস পদত্যাগ করলে কাকে নেতৃত্বে নিয়ে আসা হবে। এর মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ক্রিস্পিন ব্লান্ট বর্তমান অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে নেতা ও প্রধানমন্ত্রী করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

তাছাড়া ঋসি সুনাকের নামও শোনা যাচ্ছে। এমনকি বলা হচ্ছে বরিস জনসনকেও ফেরানো হতে পারে। তাছাড়া বুধবার পদত্যাগ করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলাও নেতৃত্ব পাওয়ার তালিকায় আছেন।

এদিকে বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর দলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দলীয় প্রধান হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন লিজ। তিনি দায়িত্ব নিয়ে মিনি বাজেট ও কর ছাড়ের ঘোষণা দেন। এতে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে।এর জেরে সাবেক অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কাওয়ারতেংকে বরখাস্ত করেন তিনি। কিন্তু অর্থনৈতিক এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাসেরও ভূমিকা ছিল। অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার পরই লিজ ট্রাসের পদত্যাগের দাবি ওঠে নিজ দলের ভেতর থেকে। যদিও ট্রাস চেয়েছিলেন  দায়িত্বে থেকে যেতে। কিন্তু বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা পদত্যাগ করলে ট্রাসের ওপর পদত্যাগের চাপ আরও ঘনিভূত হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার তাকে প্রধানমন্ত্রিত্বই ছেড়ে দিতে হলো।

সূত্র: বিবিসি, ডেইলি মেইল, দ্য গার্ডিয়ান