খিচুড়ি প্রশিক্ষণে বিদেশযাত্রা : ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ বাতিল

চেম্বার ডেস্ক:: দুই দিন ধরে সংবাদ মাধ‌্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘খিচুড়ি রান্না শিখতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর’ বিষয়ে ব‌্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ খাতে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ বাতিল করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

 

প্রাথমিক বিদ‌্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘মিড ডে মিল’ সরবরাহের লক্ষ‌্যে এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনে বিদেশ সফরের জন্য চাওয়া হয়েছে ৫ কোটি টাকা। একই বিষয়ে দেশে প্রশিক্ষণের জন্য আরও ১০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। ‘মিড ডে মিল’ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ১ হাজার কর্মকর্তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের আওতায় এসব কর্মকর্তার বিদেশ সফর করার কথা ছিল।

 

তবে পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, মহামারি করোনার কারণে বর্তমানে কোনো প্রকল্পে বিদেশ ভ্রমণ খাত রাখা হচ্ছে না।

 

গত সোমবার প্রকল্পটির মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা করেছে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় এ প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান স্বপন কুমার ঘোষ বলেছেন, ‘বর্তমানে করোনা সংকট চলছে। কোনো প্রকল্পেই বিদেশ ভ্রমণ খাত রাখা হচ্ছে না। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং প্রকল্পের আওতায় কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বাবদ ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশে ১ হাজার লোকের প্রশিক্ষণও বাতিল করা হয়েছে। জনগণের এক টাকাও অপচয় করতে দেওয়া হবে না।‘

 

বর্তমানে প্রায় ৩৩ লাখ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে আছে। বিভিন্ন কারণে তারা স্কুলে যাচ্ছে না। খাবার বিতরণ করলে শিশুরা স্কুলে যাবে এবং তাদের পুষ্টি সমস্যা নিরসন হবে বলে দাবি ডিপিইর। ১৯ হাজার ২৮২ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার টাকার এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে খাবার সরবরাহ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় সপ্তাহে তিন দিন শিক্ষার্থীদের দুপুরে খিচুড়ি, ডিম ও সবজি দেওয়া হবে। বাকি তিন দিন দেওয়া হবে পুষ্টিকর বিস্কুট।

 

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের ডিপিপিতে শিশুদের খাবার বিতরণ খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।

 

প্রকল্পের আওতায় কিছু আইটেম বাবদ ৭ কোটি ৫০ লাখ, একটি জিপ ও ছয়টি মাইক্রোবাস কেনার জন‌্য ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পেট্রোল, ওয়েল ও লুব্রিকেন্ট বাবদ ৮০ লাখ, যানবাহন ও যাতায়াত বাবদ ২০ লাখ, যানবাহন মেরামত বাবদ দেড় কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে বলেছে পরিকল্পনা কমিশন। অন্যথায় এ ব্যয় পুনঃনির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।