সর্বশেষ

» রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সংকট দেখছি তা ইভিএম নিয়ে নয়: সিইসি

প্রকাশিত: ০৭. সেপ্টেম্বর. ২০২২ | বুধবার

চেম্বার ডেস্ক:: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সংকট দেখছি তা ইভিএম নিয়ে নয়। এই সংকট আরও মোটা দাগের। আমরা আশা করি এই সংকট কেটে যাবে।

আজ বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সিইসি। সিইসি বলেন, জাফর ইকবাল বলেছিলেন এটা খুব জটিল মেশিন নয়। ওই হিসেবে বলছেন যে এটা দুর্বল যন্ত্র। যন্ত্র দুর্বল কি সবল এটা আমার বিবেচনা করার বিষয় নয়। সবল হওয়ারও দরকার নেই, দুর্বল হওয়ারও দরকার নেই। যন্ত্র কাজ করছে কি না, এটাই আসল বিষয়। গত কয়েকবছর ধরে আমরা হাজার হাজার নির্বাচনে হাজার হাজার ইভিএম ব্যবহার করেছি। কোথাও আমাদের যন্ত্র ম্যালফাংশন করেছে, এমনটি ঘটেনি।

তিনি বলেন, ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব, এই কথা তো প্রথমদিন থেকেই বলা হচ্ছে। আমরা এটা নিরসন করার জন্য প্রচুর সময় নিয়েছি। সব দলকে প্রযুক্তিবিদ নিয়ে এসে যাচাই করে দেখতে বলেছি। আমরাও ওদের কথা আমলে নিয়ে পরীক্ষা করেছি। বাজারে যে কথা চালু রয়েছে, ডিজিটাল জালিয়াতির স্বপক্ষে আমরা কোনো প্রমাণ পাইনি। দলগুলো যদি নির্দিষ্ট করে না বলতে পারে কিভাবে জালিয়াতি সম্ভব, তাহলে তো হলো না। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাচ্ছি ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব নয়। আমাদেরকেই প্রমাণ করতে হবে ডিজিটালি জালিয়াতি সম্ভব নয়, এটা কিন্তু আইনগত ভাষা নয়।

কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, যারা অভিযোগ করছেন তারাই আমাদের দেখিয়ে দেবেন লিখিত এবং মৌখিকভাবে যে কিভাবে জালিয়াতি সম্ভব। আজ অব্দি কোনো দল এই কথাটা বলেননি বা দেখাননি। কতগুলো দল এসেছিল, আমরা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি। পাঁচ-সাতটি দল সরাসরি ইভিএমের পক্ষে বলেছে, কতগুলো দল শর্ত সাপেক্ষে বলেছে।

তিনি বলেন, ইভিএমের পক্ষে যারা বলেছেন তারা একেবারেই কম নয়। আমরা তাদের ভোটাভুটির জন্য ডাকিনি। মতামতের জন্য ডেকেছিলাম। আমরা সুবিধাগুলো তুলে ধরেছি। কারচুপি ও সহিংসতা নিঃসন্দেহে কমে যাবে। আমরা স্টাডি করেছি, ওখানে আমার ভোট আপনি, আপনার ভোট আমি দিতে পারবো না। এতে জোরাজুরি, সহিংসতা অনেকখানি কমে যাবে।

সিইসি বলেন, রাজনৈতিকভাবে শতভাগ সমঝোতা যদি হয় অসুবিধা নেই। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। সব দল নির্বাচনে আসছে, সেটা তো একটা ভালো উদ্যোগ। আমাদের জন্য যেটা প্রয়োজন সেটা হলো নির্বাচনটা হলো কি না, ইভিএম নয়। নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বিঘ্ন হলো কি না, সেটা ইভিএমে হলো না কি ব্যালটে হলো, সেটা হওয়াটাই বড় কথা। কাজেই বড় ধরনের সংকট ওখানে নয়। ওই সংকটটা যদি নিরসন হয় নির্বাচনটা সুন্দরভাবে উঠে আসতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক অবস্থা আরও প্রকট হবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না। আরেকটা জিনিস- ভারতের তুলনা দেওয়া হচ্ছে, পেপার ট্রেইল যুক্ত করা নিয়ে। এটা যদি থাকে কে কাকে ভোট দিলো পরে দেখা যায়। ভারতের যতো নির্বাচন হয়েছে, ওই পেপার ট্রেইল দিয়ে কেউ এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন, এমন নজির নেই।

সিইসি বলেন, আমরা যদি ইভিএম তুলে দিই, আর যদি কারচুপি হয় আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি কেউ পরাজিত হয়ে মামলা করে পুনর্গণনা করে জয়ী হয়ে সংসদে আসতে পারবেন না। এটা গ্রাউন্ড রিয়েলিটি। আমরা এটাকে আমলে নিয়েছি। ভারত কিন্তু বায়োমেট্রিক দিতে পারেনি আমাদের ইভিএমের মতো। ইউরোপের কথা বলা হচ্ছে। ওদের যদি হাত তুলে ভোট দিতে বলেন, ওরা ভদ্রভাবে হাত তুলে ভোট দিয়ে চলে আসবে। নির্বাচন নিয়ে ওখানে কারচুপি হয় না। ওদের ওখানে কোনো মেশিন বসাতে হয় না। কারণ ওদের ওখানে সভ্যতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা এমন একটা পর্যায়ে এসেছে যে ইভিএম কী আর ব্যালট হলেই কী।

তিনি আরও বলেন, আর্থিক সংকটের কথা আমি এপ্রিসিয়েট করি। এটা মনে করলে মন্ত্রণালয় দেখবে। এটা দেখার দায়িত্ব আমার না। একটা সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমার এটা লাগবে, সরকার বললো পয়সা দিতে পারবো না, আমরা তো জোরাজুরি করবো না দেশের মানুষকে আর্থিক সংকটে ফেলে। সুষ্ঠু নির্বাচনের যে আর্থিক মূল্য এবং অসুষ্ঠু নির্বাচনের যে আর্থিক মূল্য তা ইভিএমের মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট করার আর ১৫০টি আসনে ব্যালটে ভোট করার। কোনো পরিবর্তন করতে হলে আমাদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করতে হবে।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930