এএসপি মহরমকে স্থায়ী চাকরিচ্যুত না করলে গণ-আন্দোলন : এমপি শম্ভু

চেম্বার ডেস্ক:: সম্প্রতি বরগুনায় ছাত্রলীগ কর্মীদের বেধড়ক পিটিয়ে আলোচনায় আসেন সেখানকার আলোচিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী। পরে এ ঘটনায় তাঁকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে প্রথমে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে এবং সবশেষ বরিশাল থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে নিযুক্ত করা হয়। তবে সরিয়ে নেওয়া হলেও তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও জনসমাবেশ চলছে বরগুনায়। জনসমাবেশ বক্তাদের দাবি, শুধু বদলি নয়; চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে মহরমকে।

ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর হামলা ও সংসদ সদস্যের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ ও জনসমাবেশ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘বরগুনার ছাত্রলীগের ওপর কতিপয় বিএনপি, জামায়াত শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধী লালন ও বাস্তবায়নকারী দায়িত্বহীন পুলিশ যে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে তা সারা পৃথিবীতে বিরল। এ রকম দায়িত্বহীন পুলিশ কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলি নয়, এদের স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনে জামায়াত-শিবির স্বাধীনতা বিরোধীচক্রের একটা অংশ ঘাপটি মেরে বসে আছে, এদের চিহ্নিত করে চাকরি থেকে অচিরেই বরখাস্ত করা না হলে মুক্তিযুদ্ধের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।’ ছাত্রলীগের ওপর নির্মম হামলাকারীদের অতিদ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান এমপি শম্ভু।

ছাত্রলীগের কমিটি প্রসঙ্গে এমপি শম্ভু বলেন, ‘কাউন্সিলবিহীন ঘোষিত বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের কমিটির মতো এত নোংরা, উচ্ছৃঙ্খল, বাজে কমিটি স্বাধীনতার পর থেকে আর কোনো দিন হয়নি। এই কমিটির মাধ্যমে বরগুনায় যত অঘটনের সৃষ্টি হচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, তিনি নিজের হাত দিয়ে সাইন করে এই কমিটি বাতিল করে কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠন করতে। এই কমিটি জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ কোনো অঙ্গসংগঠনই মেনে নেয়নি এবং নিতেও পারবে না।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এমপি শম্ভু বলেন, ‘এএসপি মহরমকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য আরও পাঁচজনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

এএসপি মহরম সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি জামায়াত-শিবির রাজাকার পরিবার থেকে চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন সেখানে সরাসরি জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এএসপি মহরমের বাবা সরাসরি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। মহরমকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা না হলে বরগুনার গণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

সমাবেশ শেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এএসপি মহরমের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও গণ সমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের একাংশসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মী অংশগ্রহণ করেন।

 

এদিকে শোক দিবসে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটার ঘটনায় বরগুনা জেলা পুলিশের কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বরগুনা জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

জানা গেছে, বরগুনা সদর থানার এএসআই সাগর, পুলিশ লাইনসের কনস্টেবল রবিউল ও ডিবি পুলিশের কনস্টেবল কেএম সানি এই তিনজনকে প্রত্যাহার করে ভোলা জেলা পুলিশের সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ডিবি পুলিশের এএসআই ইসমাইল ও ডিবি পুলিশের কনস্টেবল রুহুল আমিনকে প্রত্যাহার করে পিরোজপুর জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটার ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে প্রত্যাহার করে প্রথমে বরিশাল রেঞ্জে এবং পরে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান।