সর্বশেষ

» ২০২৬ সালের মধ্যে অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা আসছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

প্রকাশিত: ২১. জুলাই. ২০২২ | বৃহস্পতিবার

চেম্বার ডেস্ক:: বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘মেগা প্রকল্পে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ২০২৪ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা আসছে। মেগা প্রকল্পে ঋণ পরিশোধের সময় এগিয়ে আসছে, যা অর্থনীতির জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি পরিকল্পনা প্রয়োজন।’

আজ বৃহস্পতিবার দেশের ২০টি বড় প্রকল্প নিয়ে ভার্চুয়ালি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে বিদেশি দায়দেনা পরিশোধ করা হয় ১ দশমিক ১ শতাংশের মতো। ২০২৬ সাল নাগাদ তা দ্বিগুণ হতে পারে। এই হার ২ শতাংশের পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে।’

তখন বাংলাদেশ সমস্যায় পড়বে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সিপিডির দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটি আসলে নির্ভর করবে ওই সময়ে দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি কেমন থাকে, অর্থনীতি কতটা সুসংহত থাকে, তার ওপর।’

তিনি আরও বলেন, ‘বড় প্রকল্পের ক্ষেত্রে রাশিয়া, চীন ও জাপানকেই বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে। তার মধ্যে চীনের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বেশ কম।’

এ সময় দেশের ২০টি বড় প্রকল্প বিশ্লেষণ করে দেবপ্রিয ভট্টাচার্য বলেন, ‘এসব প্রকল্পের তালিকার অন্যতম হলো পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ ইত্যাদি। এসব প্রকল্পে প্রায় ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৬২ শতাংশ বিদেশি ঋণ।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে বড় প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে এক ধরনের জাতীয় ঐকমত্য আছে। বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখা যায় বলে রাজনীতিবিদেরা এতে আগ্রহ দেখান।’

সিপিডির দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ওই ২০টি প্রকল্প ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলতি দশকে সব কটি শেষ করা সম্ভব হবে না। প্রকল্প বাস্তবায়নে এক ধরনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে সরকারের আলোচনা শুরুকে ভালো দিক হিসেবে অভিহিত করেছেন দেবপ্রিয়।

গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আইএমএফের কাছ থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ নিচ্ছেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ফরমালভাবে আমার কাছে ঋণের কোনো প্রস্তাব আসেনি। প্রস্তাব আসলে ঋণ গ্রহণ করবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগে দেখতে হবে আমাদের প্রয়োজন আছে কি না। প্রয়োজন থাকলে নেব। তবে এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই।

এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য তার মত তুলে ধরে বলেন, ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার হোক আর সাড়ে চার বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি ডলার হোক- আইএমএফের কাছে অর্থ নেওয়ার প্রয়োজন আছে। এর ফলে মধ্য মেয়াদে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উন্নয়ন সহযোগীরা এক ধরনের আস্থা পাবেন। তারা মনে করেন, বাংলাদেশকে এক ধরনের পরিবীক্ষণ ও নজরদারিতে রাখছে আইএমএফ। তিনি এই প্রসঙ্গে সংকটে পড়া শ্রীলংকার আইএমএফের অর্থ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের উদাহরণটি তুলে ধরেন।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

February 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728