সিলেট বিভাগের গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এএমসি’র কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে গত সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আই.ই.ডি.সি.আর কনফারেন্স হলে “বিদ্যমান এএমসি পরিষেবার উপর” এক দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার সকল উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ আহমেদুল কবির।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোমিও দেশজ চিকিৎসা শাখার পরিচালক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান, পার-২ উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ মাহফুজুর রহমান, হোমিও ও দেশজ চিকিৎসা শাখার উপ-পরিচালক ও স্বাস্থ অধিদপ্তর মহাখালী এএমসি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ মোঃ নাদিরুল আজিজ।
আরও উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে প্রানবন্ত করেন অত্র অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ারের ডাঃ আবু বকর সিদ্দিক ডিপিএম (ইউনানী), ডাঃ এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান ডিপিএম (আয়ুর্বেদিক) ও ডাঃ মঈন উদ্দিন আহমেদ মামুন ডিপিএম (হোওিপ্যাথিক), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর, এএমসি ডাঃ মোঃ আবু জাহের।
কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, পাশর্^ প্রতিক্রিয়ামুক্ত ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিও চিকিৎসা ব্যবস্থা সারা বিশ্বে সর্বস্বীকৃত। আমাদের দেশে চলমান চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসা সেবার মাধ্যমেই সহজে আরোগ্য লাভ করা যায়, কিন্তু এ তথ্য অনেকেই জানে না। সরকার এ তিন ধরনের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে অনেক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে সরকারি উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ২২৩ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৬৩ জন কম্পাউন্ডার ও ৪৩৩ জন হাইল এসিসটেন্ট গার্ডেনার। এ সকল চিকিৎসকরা হাসপাতালে রোগীদের ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
কর্মশালায় স্লাইড প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় আরো বলা হয়, দেশে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার অনেক ভেষজ বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে একজন রোগী চিকিৎসকের কাছে গেলে সঠিক চিকিৎসা সেবা পাবেন। এই তিন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির অনেক সুফল রয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, অনেক সময় দেখা যায় এলোপ্যাথিক ঔষধ সেবনে রোগ না সারলে অনেকে এই চিকিৎসা ব্যবস্থার দ্বারস্থ হন এবং উপকৃতও হন। আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় এএমসি আরো এগিয়ে যাবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন।
কর্মশালায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার সিভিলসার্জন ও সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচওদের পাশাপাশি এ ৪ জেলার প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী গণমাধ্যমকর্মীরা সরকারের পক্ষ থেকে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দেশের জনগনের দূরগোড়ায় পৌঁছে দিতে উদ্যেগ গ্রহণ করায় স্বাগত জানিয়ে বলেন, আদিকাল থেকে এই তিন ধরনের চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে মানুষ সুস্থতা লাভ করেছে। শুধুমাত্র এলোপ্যাথিক চিকিৎসার পর নির্ভরশীল না হয়ে কম খরচে এ তিন ধরনের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশের উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালে আরো চিকিৎসক নিয়োগ এবং সে ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি মানসম্পন্ন ঔষধ নিশ্চিত করতে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের উপর আরো তদারকি নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঔষধ প্রশাসনকে আহ্বান জানান। সেই সাথে এ তিন ধরনের চিকিৎসা সেবায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে গণমাধ্যমকর্মীদের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণায় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী অনেক গণমাধ্যমকর্মী তাদের বক্তব্যে বলেন।
কর্মশালায় সিলেট প্রেসক্লাব, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, ওসমানীনগর, বিশ্বনাথ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।