সর্বশেষ

» মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটুক্তিকারী কে এই নূপুর শর্মা?

প্রকাশিত: ০৭. জুন. ২০২২ | মঙ্গলবার

চেম্বার ডেস্ক:: মহানবী হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে তার অবমাননাকর মন্তব্যে উত্তাল পুরো ভারতসহ মুসলিম বিশ্ব। আরব দেশগুলোর সমালোচনায় চাপে দেশটির মোদী সরকার তথা বিজেপি। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোসহ এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ১৫টি দেশ বিজেপি সরকারের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দেশটিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকও এসেছে।

এমন পরিস্থিতিতে দলের সব মুখপাত্রের মুখে লাগাম পরিয়েছে বিজেপি। ফরমান জারি হয়েছে, নেতা থেকে মুখপাত্র সবাইকে টেলিভিশনের পর্দায় মুখ দেখানো বন্ধ করতে হবে।

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন নূপুর শর্মা। এক সপ্তাহ আগে এক টেলিভিশন বিতর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন তিনি।

নূপুরের মন্তব্যে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তীব্র সমালোচনার মুখে তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিজেপি।

নূপুর পরে নিঃশর্তভাবে তার বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। তিনি টুইটারে বিবৃতি দিয়ে দাবি করেন, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা তার উদ্দেশ্য ছিল না।

কে এই নূপুর শর্মা? দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হিন্দু কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক নূপুর পরে আইনের ডিগ্রিও অর্জন করেন। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে আইনে স্নাতকোত্তরও করেছেন তিনি। নূপুর পেশায় একজন আইনজীবী।

কলেজবেলাতেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি নূপুরের। সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র নেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী হন নূপুর শর্মা।

২০০৮ সালের নভেম্বরে সংসদ হামলায় অভিযুক্ত এসএআর গিলানিকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে এই বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য আদালতে বেকসুর খালাস পেয়ে যান।

সংসদ হামলায় অভিযুক্ত অধ্যাপক গিলানির মুখে থুতু ছিটিয়ে ছিলেন নূপুরের সঙ্গী। সেই সময়ই খবরের শিরোনামে উঠে আসেন এই বিজেপি নেত্রী।

২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর একটি আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছিলেন এসএআর গিলানি। এবিভিপি-র কর্মীদের নিয়ে সভাস্থলে পৌঁছান নূপুর। শুরু হয় ভাঙচুর। নূপুরকে দেখা যায়, বিভিন্ন ভাবে গিলানিকে অপদস্ত করতে। সে সময় তাঁর এক সঙ্গী গিলানির মুখে থুতু ছেটান।

এর পরেই পদোন্নতি। ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হন নূপুর। দিল্লি বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির সদস্যও হন তিনি। পরে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র হন নূপুর।

২০১৫ সালে দিল্লি বিধানসভায় নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে প্রার্থী হন নূপুর। যদিও ৩১,৫৮৩ ভোটে কেজরির কাছে হেরে যান।

২০১৭ সালে দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র হন নূপুর শর্মা। সম্প্রতি নুপুর শর্মা এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নুপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।

তাদের এই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। নবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভও করেন। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী মুসলিম দেশগুলোও এর প্রতিবাদ জানায়।

এরপরই অনেকটা নড়েচড়ে বসে বিজেপি। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজেপি অভিযুক্ত নুপুর শর্মাকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করে। পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।

বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য নূপুরের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র, হায়দরাবাদে একাধিক এফআইআর হয়েছে ইতিমধ্যেই। মুম্বাই পুলিশ খুব শীঘ্রই নূপুরকে সমন পাঠাবে।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031